• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
বাঁশখালীতে মাঠে চার দলের ছয় নেতা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের আনাগোনা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

চট্টগ্রাম-১৬

বাঁশখালীতে মাঠে চার দলের ছয় নেতা

  • চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • প্রকাশিত ২৫ অক্টোবর ২০১৮

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে শুরু হয়েছে সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের আনাগোনা। পোস্টার, ব্যানার টাঙিয়ে তাদের কেউ জানাচ্ছেন সরকারের উন্নয়ন বার্তা। আর কেউ নিজেদের সমর্থকদের নামে ব্যানার ঝুলিয়ে নিজেদের দাবি করছেন সমাজসেবক। যদিও দলের মনোনয়ন কে পাবেন তা এখনো আলোচনা-আড্ডায় সীমাবদ্ধ। এ আসনে সরকার দল আওয়ামী লীগের টিকিট পেতে চান তিন হেভিওয়েট প্রার্থী। বিএনপি থেকে মনোনয়ন চান একজন। জামায়াত ও জাতীয় পার্টিও প্রস্তুত রেখেছে একজন করে প্রার্থী।

আওয়ামী লীগে ত্রিমুখী উত্তেজনা

এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থী চার বর্তমান সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। তাকে ঠেকিয়ে দলের টিকিট পেতে চায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সিআইপি ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ কবির লিটন। বর্তমান সংসদ সদস্য আবারো দলের প্রার্থী হতে শুরু করেছেন দৌড়ঝাপ। প্রবীণ এ আওয়ামী লীগ নেতার দাবি, তিনি হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এ অঞ্চলে সুসংঘঠিত করেছেন দলকে।

তার বিপরীতে গত তিন বছর ধরে মাঠে রয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সিআইপি। আওয়ামী লীগ নেতার চেয়ে শিল্পপতি হিসেবেই এলাকায় সুনাম রয়েছে এ প্রার্থীর। দল সংঘঠিত করার কাজে খুব বেশি সময় না দিলেও বাঁশখালীজুড়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সড়ক নির্মাণ-সংস্কার, আর্থিক অনুদান, ঘড়-বাড়ি নির্মাণ, অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা স্থাপন, শিক্ষিত যুবকদের বেকারত্বদূরসহ গরীব মানুষকে সহযোগীতা করে আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চান তিনি। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি সক্রিয় থাকলেও গ্রুপিং রাজনীতি তার অবস্থান দৃশ্যমান নয়।

অন্যদিকে প্রয়াত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আকতারুজ্জামান বাবুর ভাগিনা আব্দুল্লাহ কবির লিটনও আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হতে চান। বাঁশখালী জুড়ে তার রয়েছে শক্ত সাংগঠনিক অবস্থান। দক্ষিণ জেলা ও উপজেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের বিশাল একটি অংশ তার পক্ষ হয়ে রাজনীতি করছে দীর্ঘদিন ধরে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ আর সাংগঠনিক কর্মসূচিতে তার সরব অবস্থানের ফলে আসন্ন নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংগঠনের সুনজর মিলে যেতে পারে বলে মনে করছেন বাঁশখালী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নির্বাচনী টিকিট তার ভাগ্যে থাকুক বা না থাকুক তার অনুসারীদের দলের উন্নয়ন বার্তা পৌঁছানো কাজে নিয়োজিত রেখেছেন তিনি সাম্প্রতিক সময়ে।

মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, এ অঞ্চলের ভাগ্য উন্নয়নে আমি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাঁশখালীর মানুষকে দু-হাত ভরে দিয়েছেন। নেত্রী যদি চান আমি আবারো বাঁশখালী মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সিআইপি বলেন, আমার পরিবার বাঁশখালীর মানুষের প্রত্যাশা পূরণে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি আমার অংশগ্রহন ছিল ইতিবাচকভাবে। কখনো গ্রুপিং এ জড়াইনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে ভিশন তা বাস্তবায়নে আমি নিজ উদ্যোগে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। নেত্রী যদি আমাকে যোগ্য মনে করেন তাহলে আমি নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী।

আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ কবির লিটন বলেন, এ আসনের প্রতিটি ইউনিয়নে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে আমি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি। নেত্রীয় উন্নয়নের বার্তা হাতে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে যাচ্ছি ঘরে ঘরে। বঙ্গবন্ধু কন্যা যদি আমাকে এ আসনের জন্য প্রার্থী হিসেবে মনোয়ন দেন আমি নির্বাচনে অংশ নেব।

বিএনপি একক প্রার্থী

বাঁশখালী আসনে বিএনপির একক মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের হেরফের না হলে বিএনপির অন্যকোন নেতার এ আসনে সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ নেই। বিএনপি থেকে অন্যকোন নেতাকেও এ আসনে নির্বাচন করতে প্রকাশ্যে আগ্রহ প্রকাশ করতেও দেখা যায়নি। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সরকার দেশে নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে। আমি প্রার্থী হব কি হব না তা নির্ধারণ করবে দলীয় হাইকমান্ড। এ আসনে আমি চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। এ অঞ্চলের মানুষের সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক।

জাতীয় পার্টির হেভিওয়েট প্রার্থী

জাতীয় পার্টির হয়ে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। দুই দশক মেয়র থাকাকালে চট্টগ্রাম নগরীর উন্নয়নে তার অবদানের প্রশংসা এখনো এ অঞ্চলের মানুষের আলোচনা উঠে আসে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়ন আর রাজনীতিতে আমি কয়েক দশক ধরেই এ অঞ্চলের মানুষের পাশে ছিলাম। দল আমাকে এ আসনে মনোনয়ন দিলে আমি অবহেলিত বাঁশখালীর উন্নয়নে আমার অভিজ্ঞতা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়বো।

নাগরিক ঐক্য পরিষদের নামে জামায়াত

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী উপজেলা আমীর ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মওলানা মু. জহিরুল ইসলামকে এ আসনে প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামাতে চায় জামায়াত। এ জন্য তারা প্রস্তুতিও নিয়েছে। গঠন করেছে নাগরিক ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠন। এ বিষয়ে মাওলানা মু. জহিরুল ইসলাম বলেন, দলের ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে আমি নির্বাচনে অংশ নিব কিনা। তবে আপামর জনতাকে সাথে নিয়ে বাঁশখালী নাগরিক ঐক্য পরিষদ গঠিত হয়েছে। আমরা নির্বাচনে অংশ নিলে আমাদের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারেব না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads