• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
কুড়িগ্রামে টার্কি পালনে ঝুঁকছে হাজারো বেকার

টার্কি মুরগী

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

কুড়িগ্রামে টার্কি পালনে ঝুঁকছে হাজারো বেকার

  • কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৪ নভেম্বর ২০১৮

কুড়িগ্রামে টার্কি মুরগী পালনে জনপ্রিয়তা বাড়ছে। খামারের পাশাপাশি বাড়ির উঠানেও এই মুরগী পালন বৃদ্ধি পেয়েছে। রোগ বালাইয়ের প্রার্দুভাব থাকলেও শঙ্কায় নেই পালনকারীরা। সাফল্য নিশ্চয়তায় টার্কিতেই ঝুঁকছে বেকার যুবকরা। বাড়ছে জনপ্রিয়তা টার্কি মুরগী পালনে। টার্কিতেই স্বপ্ন দেখছে উত্তরাঞ্চলের দরিদ্র খ্যাত জেলা কুড়িগ্রামের হাজারো বেকার যুবক। সরকারি-বেসরকারিভাবে খামারিদের সহায়তা দিলে আমুল পরিবর্তন ঘটবে এখানকার অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের।

কুড়িগ্রাম জেলায় টার্কি পালন খামারীদের মধ্যে সফল উদ্যোক্তা কৃষ্ণপুর এলাকার মোঃ রিপন সরকার। তিনি পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ইন্টারনেট ঘেঁটে গত বছর ৪০০টি টার্কির বাচ্চা নিয়ে শুরু করেন খামার। বর্তমানে তার খামারে ছোট-বড় আট’শ টার্কি রয়েছে। এর মধ্যে ২০০টি ডিম দিচ্ছে। প্রতি হালি ডিম বিক্রি করছেন গড়ে ১ হাজার টাকায়। বাচ্চা বিক্রি করছেন প্রায় দেড় হাজার টাকা জোড়া।

কুড়িগ্রাম শহরের বেকার যুবক খামারী কুদ্দস আলম বলেন, প্রতি মাসে কমপক্ষে ১ লাখ টাকার টার্কি বিক্রি করেন। এতে লাভ থাকে ৫০-৬০ হাজার টাকা। কারণ টার্কিকে কেনা ফিড দিতে হয় না। সাধারণ ঘাস, লতাপাতা, সবজি দিয়েই চলে।

জেলার চিলমারী উপজেলার খামারী বেকার এস্কেন্দার মিয়া গত ১ মাস আগে টার্কি মুরগি পালনের পরামর্শ এবং সহযোগিতাকারী প্রতিষ্ঠান রংপুরের অক্টালিংক এর ইসমাইল হোসেন শাওনের নিকট থেকে ৩৫টি টার্কি বাচ্চা নিয়ে এসে তার নিজ বাড়িতে একটি ঘরে বাচ্চা পালন শুরু করেন। প্রতিদিন বাড়ির পার্শ্বের ঘাস, চাউলের গুড়া, সামান্য ফিড দিয়ে টার্কির খাবারের যোগান দিচ্ছেন। এই এলাকায় এই প্রথম টার্কি পালন শুরু করায় খামারী আশঙ্কাগ্রস্ত হলেও বর্তমানে প্রতিটি বাচ্চা বৃদ্ধি ও ওজন দেখে সে অত্যন্ত আনন্দিত ও আশান্বিত। বর্তমানে টার্কি বাচ্চার বয়স ৩৪দিন ও তাদের ওজন প্রায় ৩০০-৩৫০গ্রাম। মাত্র ১৮দিন আগে আনা ১৫দিন বয়সের বাচ্চার প্রতিটির মূল্য ২’শ টাকা হলেও বর্তমানে প্রতিটির মূল্য ৩’শ থেকে ৪’শ টাকা।

অপরদিকে, কুড়িগ্রাম জেলা সদরের ধরলা সেতুর পশ্চিম প্রান্তে বেকার নুর হোসেন নামের এক ব্যক্তি টার্কি খামার স্থাপন দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছে। কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ কোয়ার্টারের বসবাসকারী পরিবারগুলো পালন করছে টার্কি মুরগী। ধীরে ধীরে জেলা জুড়ে এই টার্কি মুরগী পালনের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েই চলছে।

অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য মুরগির মাংসের তুলনায় টার্কির মাংস সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। গরু এবং খাসির মাংসের তুলনায় চর্বির পরিমাণ অনেক কম। তাছাড়া এ জাতের মুরগি পালনে ধরা বাধা কোনো নিয়ম নেই। দেশি জাতের মুরগীর মতোই খোলামেলাভাবে পালন করা সম্ভব। এর ডিমের চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। বিশেষজ্ঞরা জানায়, অন্যান্য মুরগির খামারের তুলনায় টার্কি পালনে খাবারে ৫০%, বিদ্যুৎ ৯০% খরচ কম। একটি টার্কি খামারে স্বল্প বিনিয়োগ, কম ঝুঁকিতে দ্রুত সময়ে ভাল মুনাফা অর্জন করা যায়। টার্কি মুরগি পালনে হতদরিদ্র কুড়িগ্রামের বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে মাংসের চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।

এ ব্যাপারে কথা হলে কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডঃ আব্দুল হাই সরকার বলেন, ‘টার্কি মুরগী পালন অনেক লাভজনক। এই মুরগির মাংস ও ডিমের চাহিদা পূরণের সাথে সাথে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। টার্কি মুরগীর রোগ বালাই নিরাময়ের জন্য খামারীদের আমরা পরামর্শ সহ চিকিৎসা দিচ্ছি’।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads