• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
পরীক্ষা দিতে পারবে না বলে জীবন দিল সুখী

গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা

প্রতীকী ছবি

সারা দেশ

পরীক্ষা দিতে পারবে না বলে জীবন দিল সুখী

  • কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৫ নভেম্বর ২০১৮

ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে মা-বাবার দুঃখ ঘোচাবে। কিন্তু অভাবের কারণে এবার পিএসসি পরীক্ষা দেওয়া হবে না বলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সুখী বেগম (১০)। গতকাল বুধবার সকালে কলাপাড়া পৌর শহরের সমাজসেবা অফিস সড়কে এই হূদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। সুখী সবজি বিক্রেতা সিরাজুল ইসলামের মেয়ে।

সুখীর মা আকলিমা বেগম জানান, দুই সন্তানের মধ্যে ঢাকার পাগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী ছিল সুখী। ছোট ছেলে মাদরাসায় পড়ে। আর্থিক দৈন্যে দুই মাস আগে কলাপাড়ায় এসে হিরণ তালুকদারের বাসায় ভাড়া ওঠেন। ১৮ নভেম্বর সুখীর পিএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষার আগে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টাকার অভাবে যাওয়া হয়নি। মেয়ে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য জেদ করলেও কোনো উপায় ছিল না দেখে আগামী বছর তাকে পরীক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়। এ কষ্টে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

আজ (গতকাল) ভোরেও সুখী কইছে- ‘মা আমি কী পরীক্ষা দেব না, আর কী লেখাপড়া করব না। আমার তো ডাক্তার হতে হবে। প্রথম পরীক্ষাই যদি দিতে না পারি তাহলে এতদিন যে লেখাপড়া করছি তা দিয়ে কী হবে।’ মেয়েকে সান্ত্বনা দিতে ওর জন্য নতুন একটা জামার কাপড় ও কাঁচাবাজার কিনতে বাজারে যাই সকাল সাড়ে ১০টায়। ফিরে এসে দেখি মেয়ে আমার ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছে। নতুন জামা তার আর পরা হলো না। পাগলপ্রায় মা আকলিমা সুখীর বই-খাতা, জামা-কাপড় বুকে নিয়ে শুধুই আর্তনাদ করছে।

প্রতিবেশী কল্পনা বেগম ও বাড়িওয়ালা পারভীন জানান, সুখী সারাদিন বই-খাতা নিয়ে থাকত, ছবি আঁকত। খাবার ও খেলাধুলার চেয়ে পড়ার প্রতি তার আগ্রহ ছিল বেশি। এভাবে পরীক্ষা দিতে না পেরে মেয়েটা যে আত্মহত্যা করবে তা কেউই বুঝতে পারেনি।

কলাপাড়া থানার ডিউটি অফিসার এসআই মাসুদ জানান, পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। থানায় ইউডি মামলা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads