গোপালগঞ্জে স্বীকৃত চিকিৎসক ও নার্স ছাড়াই হলো এক প্রসূতির সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার। চিকিৎসক না থাকায় অস্ত্রোপচারটি করলেন বেসরকারি হাসপাতালের মালিক নিজেই। ওই প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় ক্লিনিকটির মালিককে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রসূতিকে পাঠানো হয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এক প্রসূতিকে নিজে সিজারিয়ান অপারেশন করানোর অভিযোগে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার ‘শান্তিলতা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’-এর মালিক দেশবন্ধু বিশ্বাসকে (৫০) তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গত ৯ নভেম্বর উপজেলার পীরারবাড়ি গ্রামের বিধান হালদারের প্রসূতি স্ত্রী বীথি হালদারকে শান্তিলতা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসক এবং নার্স ছাড়াই ক্লিনিকের মালিক দেশবন্ধু বীথি হালদারের সিজারিয়ান অপারেশন করেন।
এরপর বীথি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় বিধান হালদার ইউএনওর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম মাহফুজুর রহমান ক্লিনিকটিতে অভিযান চালান।
সে সময় ইউএনও বীথি মণ্ডলের সিজারিয়ান অপারেশনের বিষয়ে ক্লিনিক মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি অস্বীকার করেন। দেশবন্ধু বিশ্বাস দাবি করেন, তার ক্লিনিকের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই সিজার করেছেন। তবে সে সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে থাকা কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল মোবাইলে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন। সেই চিকিৎসক জানান, তিনি অপারেশন করেননি। এমনকি গত দুই মাসে তিনি কোটালীপাড়ার ওই ক্লিনিকে চেম্বার করনেনি।
পরে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দেশবন্ধু বিশ্বাসকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দেশবন্ধুর বাড়ি কোটালীপাড়া উপজেলার লাটেঙ্গা গ্রামে।
কোটালীপাড়া থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুল ফারুক জানান, শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।