• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
গোলপাতা আহরণে সাড়া নেই বাওয়ালিদের

গোলপাতা

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

গোলপাতা আহরণে সাড়া নেই বাওয়ালিদের

  • এ কে হিরু, খুলনা
  • প্রকাশিত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সুন্দরবনে চলতি গোলপাতা আহরণ মৌসুমে তেমন সাড়া মিলছে না বাওয়ালিদের। বনবিভাগের কড়াকড়ি আরোপ ও তুলনামূলকভাবে গোলপাতার চেয়ে টিনের দাম কম হওয়ায় দিন দিন এর ব্যবহার কমছে। তারপরও জীবিকার তাগিদে পুরনো পেশা টিকিয়ে রাখতে ও নিতান্তই দরিদ্র মানুুষের চাহিদা মেটাতে মহাজন-বাওয়ালিরা তাদের ব্যবসা ধরে রেখেছেন।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান ও চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. শাহিন কবির জানান, পূর্ব সুন্দরবন বিভাগে শরণখোলা, চাঁদপাই ও শ্যালা নামক তিনটি গোলপাতা কূপ রয়েছে। এরমধ্যে অভয়ারণ্য ঘোষিত শরণখোলা গোলপাতা কূপে গত তিন বছর ধরে গোলপাতা আহরণ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। শরণখোলার ৯৫ ভাগ এলাকাই অভয়ারণ্য হওয়ায় সেখানে মাছ ও গোলপাতাসহ সকল ধরনের বনজ সম্পদ আহরণে সরকারের পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে শুধু শ্যালা কূপের পাতা আহরণের জন্য পাস দেওয়া হচ্ছে। এ কূপের আহরণ শেষ হওয়ার পর চাঁদপাই কূপের পাস দেওয়া হবে। এ পর্যন্ত শ্যালা কূপে ৪১টি নৌকার পাস দেওয়া হয়েছে। যারা প্রতিদিন সেখান থেকে পাস অনুযায়ী নৌকা প্রতি ৫০০ মণ গোলপাতা কেটে বোঝাই করছেন। বনবিভাগের হিসাবমতে গত মৌসুমে এই দুই কূপ থেকে প্রায় ৪০ হাজার মণ গোলপাতা আহরণ হয়েছিল। এবারো বনবিভাগের আহরণ লক্ষ্যমাত্রা ৪০ হাজার মণেই রয়েছে।

মূলত নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণ মৌসুম। কিন্তু নানা কারণে চলতি মৌসুমে বাওয়ালিরা বেশ দেরিতেই শুরু করেছেন গোলপাতা কাটার কাজ। মোংলা শহরের মাদরাসা রোডের গোলপাতা ব্যবসায়ী ইমন হোসেন বলেন, আগে গোলপাতা বহনকারী নৌকার দুই পাশে ঝুল (ভারসাম্য) হিসেবে বনের বিভিন্ন ধরনের গাছ কেটে আনা হতো। কিন্তু এখন সেগুলো কাটা নিষিদ্ধ করায় দেশীয় গাছ নিয়ে ঝুল হিসেবে ব্যবহার করায় খরচও বাড়ছে ব্যবসায়ীদের। এসব কারণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলায় এখন মোংলা শহরে হাতে গোনা দুই একজন আড়তদার তাদের ব্যবসা ধরে রেখেছেন মাত্র।

চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শাহিন কবির বলেন, আগে বড় বড় নৌকা নিয়ে এসে বাওয়ালীরা তাদের পাস পারমিট ছাড়া অতিরিক্ত গোলপাতা কেটে নিতেন। এতে তারা অধিক লাভবান হলেও বনবিভাগ প্রকৃত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হতো। যার ফলে গত বছর থেকে বড় নৌকা বাদ দিয়ে শুধু ১৪ মিটার দৈর্ঘ্যের নৌকার ব্যবহার ও বনের কোনো ধরনের গাছ না কেটে দেশীয় গাছ/কাঠ দিয়ে নৌকার ঝুল ব্যবহারের কড়াকড়ি নিয়ম করায় বাওয়ালীদের সংখ্যা এবার কিছুটা কম দেখা যাচ্ছে।

চলতি মৌসুমে গোলপাতা আহরণে বাওয়ালী/নৌকা কম হওয়ার কারণ হিসেবে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, তুলনামূলকভাবে গোলপাতার চেয়ে টিনের দাম কম। দুই বছর পর গোলপাতা পাল্টাতে হয় আর টিনের ব্যবহার দীর্ঘস্থায়ী হওয়াটাই অন্যতম কারণ। তিনি আরো বলেন, আগে ঘরবাড়িতে গোলের ব্যবহার হতো, এখন উঠে গেছে বললেই চলে। শুধু উপকূলের দরিদ্র শ্রেণির মানুষই এর ব্যবহার ধরে রেখেছেন। আর ধনীরা ব্যবহার করছেন চিংড়ি ঘেরগুলোর ঘরে।

 

 

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads