• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ঝুঁকিপূর্ণ চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধ

মেঘনা নদীতে দেওয়া চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধের পুরানবাজার রনাগোয়াল এলাকার একাংশ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

ঝুঁকিপূর্ণ চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধ

  • মহিউদ্দিন আল আজাদ, চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধের ৫শ’ মিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই শুস্ক মৌসুমে বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে আসন্ন বর্ষায় হুমকির মুখে পড়বে চাঁদপুর শহর। বিশেষ করে ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে চাঁদপুরের প্রধান ব্যবসা কেন্দ্র পুরানবাজার।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণে ১শ’ ৬৫ কোটি টাকা অনুমোদন চেয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু এখনো বরাদ্দ মিলেনি। এমনকি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ পুরানবাজারের জন্য নোটশিটের মাধ্যমে সাড়ে ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েও এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পাউবো কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয়রা জানান, চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে দেওয়া শহর রক্ষাবাধের মোট দৈর্ঘ হলো তিন হাজার ৩শ’ ৬০ মিটার। এরমধ্যে পুরানবাজার অংশে রয়েছে ১ হাজার ৬শ’ ৩০ মিটার ও নতুনবাজারের অংশে হলো ১ হাজার ৭শ’ ৩০ মিটার। গতবছর বর্ষায় মেঘনা নদীর পানির তীব্র ঘূর্ণিপাকে পুরানবাজার হরিসভা এলাকায় বাঁধে ভয়াবহ ধস দেখা দিলে তড়িঘড়ি করে কিছু বালুভর্তি বস্তা ও কংক্রিট বল্ক ফেলে প্রাথমিকভাবে বাঁধ রক্ষা করা হয়। কিন্তু বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমে বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে আগামী বর্ষায় হুমকির মুখে পড়বে বাঁধ। এতে করে ব্যাপক ভাঙনের কবলে পড়তে পারে চাঁদপুর শহর।

চাঁদপুর বড়স্টেশন এলাকার বাসিন্দা রাজুল ইসলাম অভি বলেন, বর্ষা মৌসুমে দেশের উত্তর বঙ্গের সকল নদ-নদীর পানি এই মেঘনা নদী হয়ে সাগরে যায়। এতে করে নদীতে অনেক ¯্রােত থাকে। বিশেষ করে চাঁদপুর বড়স্টেশন এলাকায় অবস্থিত পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল হওয়ায় এখানে সব থেকে বেশি ঘূর্ণিপাকের সৃষ্টি হয়। ফলে রক্ষাবাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকে। বিগত সময়েও এই স্থানে বাঁধ ভাঙ্গন ও ধ্বসের কবলে পড়েছে। তাই সরকারের উচিৎ আগামী বর্ষায় চাঁদপুরকে ভাঙনের হাত থেকে বাঁচাতে শহর রক্ষাবাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ কাজ সম্পন্ন করা।

চাঁদপুর পুরানবাজার এলাকার বাসিন্দা চয়ন সাহা বলেন, মেঘনা নদীতে দেওয়া শহর রক্ষাবাঁধ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গতবছর বর্ষায় পানির ¯্রােতে এই বাঁধের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাই এখনি বাঁধ রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আমাদের বাসা-বাড়ী তলীয়ে যেতে পারে নদী গর্ভে। আমরা অনেক আতঙ্গে দিন পাড় করছি এখন।

নদী ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির চাঁদপুর দক্ষিণাঞ্চল শাখা সভাপতি ফয়েজ আহমেদ মন্টু বলেন, গত বর্ষাতেই বাঁধ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। এবছর শুষ্ক মৌসুমে পরিকল্পিতভাবে বাঁধ মেরামত করা না হলে আগামী বর্ষায় ভয়াবহ ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। এতে অনেক বসতবাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ চাঁদপুর শহর নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান দেশ রূপান্তরকে বলেন, চাঁদপুর জেলা একটি নদীভাঙন কবলিত এলাকা। এ ভাঙন রোধে ৩ হাজার ৩শ’ ৬০ মিটার এলাকায় চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ ইতোপূর্বে শেষ হয়েছে। কিন্তু গত বর্ষায় পুরানবাজারের সাড়ে ৪শ’ মিটার এলাকার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে বর্ষাকালীন সময়ে ইমার্জেন্সি কাজ করে আড়াইশ মিটার রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, এ অর্থবছরের শুরুতেই বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণে ১শ’ ৬৫ কোটি টাকা অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ এখনো পাইনি। এমনকি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসাকেন্দ্র পুরানবাজারের জন্য নোটশিটের মাধ্যমে সাড়ে ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েও পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads