কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভান্তি গ্রামে মেহরাব হোসেন (২২) নামে নৌবাহিনীর এক সদস্যকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। তারা হচ্ছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য কামাল হোসেন, সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক মনির ও মেহরাবের মরদেহটি পাওয়া স্থানের পানি উত্তোলনের মেশিন চালক হারুন।
এদিকে আজ শুক্রবার জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মেহরাবের মরদেহ দাফন করা হয়। তার আগে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের একটি দল মেহরাবের লাশের উপর জাতীয় পতাকা দিয়ে আচ্ছাদিত করে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় বেজে উঠে বিউগলের করুণ সুর।
নিহত মেহরাব ওই গ্রামের প্রবাসী সফিকুল ইসলামের ছেলে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে কাজ করছে পুলিশ, র্যাব, সিআইডি, পিবিআইসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশ ও মেহরাবের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জানুয়ারিতে নৌ-বাহিনীতে নাবিক (সৈনিক) পদে যোগ দেন মেহরাব হোসেন। এক বছর খুলনায় প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি চট্টগ্রামে বদলী হন। তিনি মা ও স্বজনদের দেখার জন্য বুধবার রাতে বাড়ি রওয়ানা দেন। বাড়িতে আসার পথে কুমিল্লার আলেখারচর বিশ্বরোড থেকে তার মায়ের কাছে মোবাইল ফোনে জানান, বিশ্বরোড থেকে সিএনজিতে অটো রিকশায় উঠেছেন। দেরি হওয়ায় মা ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী তাকে খুঁজতে বের হন।
ষোলনল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ কামাল হোসেন জানান, রাত প্রায় ৩টা সময় জেলেদের নিয়ে তাঁর পুকুর থেকে মাছ ধরার জন্য যাওয়ার পথে গোমতী নদীর বাঁধে ২টি ব্যাগ দেখতে পান তিনি। তখন তার সাথে থাকা মাছ ধরার শ্রমিকদের ব্যাগগুলি মসজিদে রেখে আসার জন্য বলেন। তখনই নিহত মেহরাবের মা ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী খুঁজতে-খুঁজতে তাঁদের দিকে আসে। মেহরাবের মা এই ব্যাগ গুলি দেখে ছেলের বলে জানান। খোাঁখুঁজির এক পর্যায় গোমতী নদীর পাড়ে ভেতরে মেহরাবের লাশ দেখতে পাওয়া যায়।
মেহরাব হত্যার ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের আসামি করে বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
বুড়িচং থানার ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, সৈনিক মেহরাবকে দুর্বৃত্তরা গলা কেটে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। দুর্বত্তরা নিহতের মোবাইল, টাকা-পয়সাসহ অন্যান্য মালামাল লুটে নিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে।