• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
কক্সবাজারে পর্যটকদের ভীড়, সর্বত্র গুনতে হচ্ছে বাড়তি দাম

টানা ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকদের ভীড়

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

কক্সবাজারে পর্যটকদের ভীড়, সর্বত্র গুনতে হচ্ছে বাড়তি দাম

  • মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার
  • প্রকাশিত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

মহান ভাষা দিবস সহ টানা ছুটিতে কক্সবাজারে এখন পর্যটকের উপচে পড়া ভীড়। এবারের ছুটিতে অন্তত ৩ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে এসেছে বলে ধারনা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাই সব হোটেল মোটেল ছাড়াও ছোটখাট কটেজের কোথাও কোন রুম খালি নেই। সে কারনে অনেক পর্যটককে গাড়ীতে এমনকি ফুটপাতে রাত কাটাতে হয়েছে। এছাড়া খাবারের দোকান গুলোতেও দেখা গেছে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতি। তবে এই সুযোগে বেশির ভাগ হোটেলে বাড়তি রুম ভাড়া এবং খাবার হোটেলে বেশি দাম রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে এছাড়া চট্টগ্রাম কক্সবাজারগামী গাড়িতে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে প্রশাসন বলছে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন হলেও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এখনো পর্যন্ত ঘটেনি।

কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্টের সর্ব প্রথম হোটেল সুগন্ধা হোটেলের ম্যানেজার নুরুল আবছার বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারী সহ টাকা ৩ দিনের ছুটিতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে এখন পর্যটকে ঠাসা। কোথাও কোন রুম খালি নেই এমনকি কোন রেস্টুরেন্টে গেলেও খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বেশির ভাগ পর্যটক আগেই রুম বুকিং দেওয়ার কারনে হোটেলে কোন রুম ছিল না। ২১ ফেব্রুয়ারী অন্তত ২০০ জন পর্যটককে রুম দিতে না পেরে দুঃখিত বলতে হয়েছে। আমার মতে এত বিপুল সংখ্যক পর্যটক এই মৌসুমে আর আসেনি।

কক্সবাজার হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, কক্সবাজারে হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ, লজসহ সব মিলিয়ে কমপক্ষে ৩০ হাজার হোটেল আছে সেখানে কমপক্ষে ২ লাখের বেশি পর্যটক থাকতে পারে। তবে আত্বীয় স্বজনের বাড়ি সহ অন্যান্য মিলিয়ে আরো ৫০ হাজার মানুষ থাকতে পারে। তবে এবারে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসায় বেশ কিছু পর্যটক হোটেলের রুম পায় নি। তাই আমাদের কাছে তথ্য আছে বেশ কিছু পর্যটক গাড়ীতে রাত কাটিয়েছে এটা দুঃখ জনক।

এদিকে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে তিল ধারনের ঠাই নেই। এছাড়া কোন গণপরিবহন পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তার মোড়ে শত শত পর্যটক গাড়ীর জন্য দাড়িয়ে থাকলেও কোন গণপরিবহণের দেখা পাওয়া যাচ্ছেনা। এছাড়া ঢাকা চট্টগ্রামে চলাচল করা গাড়ীতে কোন সিট পাওয়া যাচ্ছে না। এই সুযোগে অনেকে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামের টিকিট বিক্রি করছে বলে জানা গেছে। এছাড়া বেশির ভাগ খাবারের দোকানেও অতিরিক্ত দাম নেওয়ার অভিযোগ করেছে পর্যটকরা।

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া থেকে আসা পর্যটক ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ছেলে মেয়েদের আবদারের কারনে ২০ ফেব্রুয়ারী ৪ দিনের জন্য স্বপরিবারে কক্সবাজার এসেছি। ভাগ্যভাল অনলাইনে আগেই হোটেল বুকিং দিয়ে এসেছিলাম। তবে এখানে এসে রয়েল বীচ হোটেল কতৃপক্ষ নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি দাবী করছে তবুও সেই বাড়তি টাকা দিয়েই রুম নিয়েছি। কিন্তু এতবেশি পর্যটক আসবে এটা চিন্তাই করিনি। এখানে চারিদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। আমি নিজে দেখেছি অনেকে পর্যটক বেগ হাতে নিয়ে রাত ১২ টার পরও রাস্তায় রাস্তায় হাটছে সাথে অনেকের মহিলাও আছে।

আরেক পর্যটক নাছির উদ্দিন বলেন, আমরা হোটেলে খেতে গেছি সেখানেও দেখি দীর্ঘ লাইন, সামান্য সবজি দিয়ে ভাত খেলেও বিল আসছে ১৫০ টাকা, আর সকালে পরটা নিচ্ছে ২০ টাকা সবজির দাম রাখছে ৪০ টাকা, ডিম বিক্রি করছে ৩০ টাকা এটা অনেক বেশি কিন্তু কিছুই করার নেই খেতে হচ্ছে। তবে বিপুল সংখ্যা পর্যটকের মাঝে কোথাও কোন বিপত্তি বা কোন সমস্যা না হওয়াতে খুশি পর্যটকরা। এছাড়া কিছু শুটকি কিনতে গিয়েও বেশ বাড়তি দাম আর বার্মিজ মার্কেটেও একই অবস্থা সব খানে বাড়তি দাম।

এ ব্যপারে কক্সবাজার টুরিষ্ট পুলিশ সুপার মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, ৩ লাখের বেশি পর্যটক বর্তমানে কক্সবাজার অবস্থান করছে কিন্তু কোন বড় ধরনের বিপত্তি ঘটেনি, কোন ধরনের আইন শৃংখলার অবনতি হয়নি। এছাড়া সমুদ্রে গোসল করতে নেমে যাতে কোন সমস্যা নয় হয় সেজন্য আমরা সার্বক্ষনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেমন চুরি ছিনতাই বাই কোন হয়রানি হয়েছে এমন কোন খবর পায়নি। তবে অনেক জায়গা থেকে রুম ভাড়া বেশি নেওয়ার খবর পেয়েছি আমরা তাৎক্ষনিক সেই সব হোটেলে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছি এবং অবিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ হোসেন বলেন,পর্যটকদের নিরাপত্তায় মাঠে বিপুল সংখ্যা পুলিশ মোতায়েন করা আছে, এছাড়া ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক রাখতে ও আমরা প্রতি মোড়ে মোড়ে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। সে কারনে কয়েক হাজার গাড়ী বাইরে থেকে আসলেও তেমন যানজট হয়নি। এছাড়া কোন পর্যটন ছিনতাই বা অন্যকোন সমস্যা পড়েছে বলে খবর আসেনি। তবে বেশ কিছু পর্যটক রুম পায়নি বলে খবর পেয়েছি।

জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, এটা বিখ্যাত পর্যটন নগরী এখানে পর্যটকরা আসবেই এটা ইতি বাচক হিসাবে সবাইকে নিতে হবে। আর সেখানে ৩/৪ লাখ মানুষ হবে সেখানে ছোটখাট কিছু সমস্যা হতেই পারে। তবে মাঠ পর্যায়ে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সার্বক্ষনিক কাজ করেছে এবং এখনো করছে। সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলাদা সেল গঠন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads