• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
‘পাশ দিয়ে অনেকে গেলেও উদ্ধার করেনি’

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তিন মধ্যে নারী আনসার সদস্য রিতা আক্তারের লাশ করা হয়েছে

ছবি : সংগৃহীত

সারা দেশ

‘পাশ দিয়ে অনেকে গেলেও উদ্ধার করেনি’

  • নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৩ এপ্রিল ২০১৯

নারায়ণগঞ্জে ভোটের দায়িত্ব শেষে ফেরার পথে ট্রলারটি যখন ডুবে যাচ্ছিল তখন পাশ দিয়ে অনেক নৌযান গেলেও তারা কেউ উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি বলে আক্ষেপ করেছেন চালক শাহ পরান। গত রোববার জেলার সোনারগাঁ উপজেলায় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন শেষে ব্যালট বাক্স নিয়ে ফেরার পথে ট্রলার ডুবে এক নারী আনসার সদস্যের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এখনো দুজন নিখোঁজ।

ওই ট্রলারের চালক শাহ পরান বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছিল। ঘাট থেকে ট্রলার ছেড়ে মেঘনার মাঝ নদীতে গেলে হঠাৎ কালো মেঘে পুরো আকাশ অন্ধকার হয়ে যায়। প্রচণ্ড বাতাস ও ঢেউয়ের আঘাতে মুহূর্তেই ট্রলারটি ঘুরে গিয়ে পানি উঠে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার সময় অনেকেই ছাদে আশ্রয় নেন। কেউ কেউ ব্যালট বাক্স আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করে। সে সময় আমাদের পাশ দিয়ে অনেক নৌকা-ট্রলার গেলেও কেউ উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি। তারা এগিয়ে এলে বা বয়া ফেললে সবাই বাঁচতে পারতেন।

ঘণ্টাখানেক পরে একটা লবণবাহী সাম্পান এসে তাদের উদ্ধার করে। ততক্ষণে আনসার সদস্য রিতা আক্তার (৩৫), চরহোগলা ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক সোনারগাঁ মেঘনাঘাট শাখার ব্যবস্থাপক বোরহান উদ্দিন ও পুলিশের শহর উপপরিদর্শক (টিএসআই) মো. সেলিম নিখোঁজ হন। সোমবার সকালে রিতার লাশ পাওয়া যায়। বোরহান ও সেলিমের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ, নৌপুলিশ ও নৌবাহিনীর ১০ সদস্যের ডুবুরি দল তাদের খোঁজে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

ওই সময় প্রায় একসঙ্গে দুটি ট্রলারে করে ফিরছিলেন ভোট কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। একটি ট্রলার ডুবে যায় এবং অন্যটি ঝুঁকিতে পড়ে। সেই ট্রলারে ছিলেন চরকিশোরগঞ্জ ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ইউসিবি ব্যাংকের কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, হঠাৎ প্রচণ্ড বাতাস ও ঢেউয়ের কারণে আমাদের ট্রলারের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। একপর্যায়ে ঢেউয়ের আঘাতে ট্রলারের তলা ফেটে যায়। আমরা ট্রলারের পানি সেচে ফেলার চেষ্টা করি। কিন্তু ব্যর্থ হই। পানি উঠতে থাকায় একপর্যায়ে ট্রলারের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। অন্ধকারে আমরা কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না। বিদ্যুৎ চমকানোর আলোতে দেখি ট্রলারটি উসমানির চরে কাছাকাছি চলে গেছে। আমরা নদীতে লাফিয়ে পড়ে সাঁতরে প্রাণ বাঁচাই।

গত সোমবার সন্ধ্যায় সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের দেখতে যান নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহম্মেদ।  তিনি বলেন, ট্রলারডুবিতে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ও আহত প্রত্যেককে চিকিৎসার জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads