• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
হাজীগঞ্জে গৃহবধুকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা, স্বামী, ভাসুর ও শাশুড়ী আটক

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

হাজীগঞ্জে গৃহবধুকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা, স্বামী, ভাসুর ও শাশুড়ী আটক

  • চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৩ মে ২০১৯

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে গৃহবধুকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে স্বামী, ভাসুর ও শাশুড়ীকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার হাজীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যুশয্যা গৃহবধুর বড় ভাই অরবিন্দ আশ্চার্য্য।

হাজীগঞ্জ থানার মামলার সূত্রে জানাযায়, হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৫নং ওয়ার্ডের বকুলতলা রোডের রঞ্জিত আশ্চার্যের ছেলে বিপুল আশ্চার্য্য ও তার বড় ভাই সজল আশ্চার্য্য গত ৩০ এপ্রিল গভীর রাতে বিপুল আশ্চার্যের স্ত্রী দিপিকা আশ্চার্য্য (মনিকা) কে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টিকে দূর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে রাতেই দিপিকাকে প্রথমে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরবর্তীতে কুমিল্লা মেডিকেলে নেয়া হয়। সেখান থেকেই ওই দিনই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটি ভর্তি করা হয়। দিপিকার শরীরের ৯২ শতাংসই পুড়েগেছে বলে জানান দিপিকার বড় ভাই অরবিন্দ আশ্চার্য্য।

মোবাইল ফোনে বোনের দূর্ঘটনার খবর শুনে দিপিকার বড় ভাই অরবিন্দ আশ্চার্য্য ঢাকা মেডিকেল বার্ণ ইউনিটে তার বোনকে দেখতে গেলে ভাইকে দিপিকা জানান, তাকে মারধর খরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার করা হয়। এর পরই তার ভাই বৃহস্পতিবার দুপরে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে।

গৃহবধু দিপিকাদের গ্রামের বাড়ী নরসিংদী জেলার ছোট মাধবদী উপজেলার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে। পারিবারিকভাবে ১০ বছর পূর্বে বিপুলের সাথে তার বিয়ে হয়েছে। তাদের দাম্পত্য জীবনে ৩ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

বিপুল মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে তাদের পরিবারে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো বলে জানাযায়। বিপুলের কয়েকজন বন্ধু (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, বিপুল ছিল মারত্মক মাদকাসক্ত। সে ঘরে বসেই ইয়াবাসেবন করতো। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে প্রায় বিবেদ লেগে থাকতো।

অপর দিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির পিপিএম, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগির হোসেন রনি।

দিপিকার বড় ভাই মুঠোফোনে জানান বিপুলের আমার বোনকে শরীরে আগুন লাগানোর পূর্বে তাকে মেরে ফেলার জন্য মারধর করেছে। তার মাথা ও কপাল ফেটে গেছে। বিপুল, সজল, তাদের মা সন্ধ্যা রাণী আশ্চায্য, সজলের স্ত্রী দিপা আশ্চার্য্য মিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার বোনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

তিনি জানান, দিপিকার গায়ে আগুন দিয়ে বিপুল সজল, তার মা ও তার ভাবী দিপাকে খবর দিয়ে তাদের বাসায় আনে পরবর্তীতে রাতে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।

তিনি আরো জানান, যে রুমে দিপিকাকে নির্যাতন করা হয়েছে ওই রুমের দেয়ালের সাথে রক্তের দাগ রয়েছে। ঘটনার পর থেকে আমার সাড়ে ৩ বছরের ভাগনীকে নিয়ে দিপা পলাতক রয়েছে।

তবে ঠিক কি জন্য আগুন দেয়া হত্যার চেষ্টার করা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে অরবিন্দ জানান, সজল ও বিপুলদের অনেক টাকা মূল্যের একটি জায়গা আছে। কয়েক মাস যাবত ওই জায়গা বিক্রয়ের চেষ্টা করে আসছে সজল ও বিপুল। আমার বোন দিপিকা ওই জায়গা বিক্রয়ের বাঁধা দিয়ে আসছিল। এছাড়াও তাদের পারিবারিক কলহ ছিল দীর্ঘ দিনের।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগির হোসেন রনি জানান, দিপিকার শরীর ৯৯ শতাংসই পুড়ে গেছে। মৃত্যুর পূর্ববর্তী সময়ের জবানবন্ধী নেয়ার জন্য হাজীগঞ্জ থানার এসআই সঞ্জয় ঢাকা মেডিকেলে গিয়েছে। সেখান থেকে দিপিকার ভাই অরবিন্দ আশ্চার্যের উপস্থিতিতে মৃত্যু পূর্ববর্তী সময়ের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। বক্তব্যে দিপিকাকে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানান দিপিকা।

তিনি জানান, বিপুলের বড় ভাই সজলকে হাজীগঞ্জ থেকে আটক করা হয়েছে আর বিপুল ও তার মা সন্ধ্যা রানী আশ্চার্য্যকে ঢাকা মেডিকেল থেকে আটক করে রাতে হাজীগঞ্জে নিয়ে আসা হয়েছে। অপর আসামী সজলের স্ত্রী দিপা আশ্চার্য্যকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads