• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
শুধু বিনোদনকেন্দ্র নয়, সংস্কৃতি চর্চারও কেন্দ্র হবে জামালপুর ডিসি পার্ক

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

শুধু বিনোদনকেন্দ্র নয়, সংস্কৃতি চর্চারও কেন্দ্র হবে জামালপুর ডিসি পার্ক

  • আবদুল লতিফ লায়ন, জামালপুর
  • প্রকাশিত ১১ মে ২০১৯

জামালপুর সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের তীরসংলগ্ন পরিত্যক্ত পার্কটিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। সংস্কার করে চিত্তবিনোদনের সুযোগসহ দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানো হচ্ছে পার্কটি। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পার্কটির নতুন নামকরণও হয়েছে, জামালপুর ডিসি পার্ক।

সরেজমিন দেখা যায়, পার্কের মূল ফটকে দৃষ্টিনন্দন বিশাল গেট তৈরি করা হয়েছে। পার্কের সীমানাদেয়ালটিও বিভিন্ন কারুকাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। পার্কের ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে রমনা বটমূলের আদলে গড়ে ওঠা বটমূল। এটি বিভিন্ন কারুকাজে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। জঙ্গলে ঢাকা পার্কটি এখন পরিচ্ছন্ন। কোথাও জঙ্গল নেই। পুরো মাঠে নতুন মাটি দেওয়া হয়েছে। শিশুদের চিত্তবিনোদনের জন্য বিভিন্ন নতুন রাইড বসানো হয়েছে। বড়দের জন্য ছাতাসহ বসার স্থান করা হয়েছে। নানা উন্নয়নমূলক কাজ এখনো চলছে।

জেলা প্রশাসনের কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালে শহরের পাথালিয়া এলাকায় ২ একর জমির ওপর শিশুপার্ক নির্মাণ করা হয়। পার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য দামি গাছ লাগানো হয়। ২০১০ সাল পর্যন্ত পার্কটি খুব ভালোভাবে চলছিল। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশুরা বিনোদনের জন্য যেত। সে সময় পার্কটি জামালপুর পৌরসভার আওতায় ছিল। ২০১১ সাল থেকে পার্কটি সংস্কার ও পরিচর্যার অভাবে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। নিয়মিত পরিচর্যা ও অবহেলায় পৌর শহরের একমাত্র শিশুপার্কটি খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পুরো পার্ক জঙ্গলে ঢেকে যায়। পার্কের ভেতর তখন গোচারণভূমিতে পরিণত হয়। আট বছর ধরে শিশুপার্কটি এমন বেহালের মধ্যেই ছিল। সম্প্রতি বিষয়টি নজরে আসে অতিরিক্ত একজন জেলা প্রশাসকের। এরপর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পুরো পার্কটি ঢেলে সাজানো হচ্ছে।

পৌর শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পার্কে থাকা বিভিন্ন রাইড ভেঙে গিয়েছিল। ভেতরে জঙ্গল ও ময়লা–আবর্জনার কারণে শিশুরা তো দূরের কথা, বড় মানুষও ঢুকতে পারত না। তবে সম্প্রতি পার্কটি সংস্কার করা হয়েছে। এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটিও সেখানে করা হয়েছে।

জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, পৌর শহরে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের বসবাস। সরকারি-বেসরকারি মিলে বিদ্যালয় রয়েছে শতাধিক। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে পার্কটি বেহাল ছিল। শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন চিত্তবিনোদন ও খেলাধুলার পর্যাপ্ত সুযোগ। কিন্তু শহরে একেবারেই এ সুযোগ নেই। কিছু খেলার মাঠ থাকলেও মানুষের বসতির কারণে তা–ও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে শিশুরা বিনোদনের জায়গা না পেয়ে অলস হয়ে পড়ছে। এতে তাদের বুদ্ধিবৃত্তির সুষ্ঠু বিকাশ ঘটছে না। পরিত্যক্ত পার্কটি জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে নতুনরূপে সাজাচ্ছে। খুবই ভালো উদ্যোগ। এতে শিশুদের বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজীব কুমার সরকার জানান, পরিত্যক্ত পার্কটিকে সংস্কারের মাধ্যমে আমূল পাল্টে দেওয়া হয়েছে। নান্দনিক ও আধুনিক রূপ পেয়েছে পার্কটি। শিশুদের জন্য বিভিন্ন রাইড ও আকর্ষণীয় নকশায় সুসজ্জিত করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় আকর্ষণ রমনা বটমূলের আদলে গড়ে তোলা পার্কের বটতলা। এ বছর সেখানে বাংলা বর্ষবরণ আয়োজন করা হয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, শুধু চিত্তবিনোদনের কেন্দ্র নয়, শিল্প-সংস্কৃতিচর্চারও অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে ডিসি পার্কটি। এ ছাড়া শিশুদের জন্য সব ধরনের রাইড থাকবে, যা তাদের আনন্দ দেবে। প্রাকৃতিক পরিবেশে তারা খেলাধুলার সুযোগ পাবে। শিশুদের একটি আনন্দময় শৈশব উপহার দেবে পার্কটি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads