• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
মজুরি না পেয়ে মানবেতর দিনযাপন পাটকল শ্রমিকদের

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

শ্রমিক আন্দোলনে স্থবির নরসিংদীর দুই পাটকল

মজুরি না পেয়ে মানবেতর দিনযাপন পাটকল শ্রমিকদের

  • সুজন বর্মণ, নরসিংদী
  • প্রকাশিত ১৬ মে ২০১৯

দিনরাত পরিশ্রম করেও মিলছে না শ্রমিকের প্রাপ্য মজুরি। সময় মতো বকেয়া পরিশোধ না করায় শ্রমিকদের কাছে এখন আর বাকিতে সদাই বিক্রি করছে না কোনো দোকানি।  তাই পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে নরসিংদীর ইউএমসি জুট মিল ও পলাশ উপজেলার বাংলাদেশ জুট মিলের শ্রমিকরা।  রমজান মাসে এই সংকট আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে বাধ্য হয়ে ফের বকেয়া মজুরি আদায়সহ ৯ দফা দাবীর আন্দোলনে নেমেছে শ্রমিকরা।  গত সোমবার ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছে পাটকলের শ্রমিকরা।  দাবী আদায়ে জুট মিলের প্রধান ফটকের সামনে প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে শ্রমিকরা।

নরসিংদী ইউএমসি জুট মিলে (ইউনাইটেড-মেঘনা ও চাঁদপুর ইউনিটে) স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে কর্মরত আছেন ৪ হাজার ৫৭৫ জন শ্রমিক।  প্রতিদিন তিনটি ইউনিটে ১৯ টন পাটজাত দ্রব্য উৎপাদিত হয়। যা দেশের অর্থনিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অন্যদিকে পলাশ উপজেলার ৫২০ তাঁতের বাংলাদেশ জুট মিলটিতে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কমর্রত আছেন। এক সময় বাংলাদেশ জুট মিলটি দেশের অন্যতম লাভজনক জুট মিল ছিল। কিন্তু গত ৪ মাস ধরে মজুরি পাচ্ছেন না এই দুই মিলের শ্রমিকরা।  নতুন করে যোগ হয়েছে আরো ১১ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি।

বাংলাদেশ জুট মিলের ফিনিশিং বিভাগের শ্রমিক জামাল বলেন, ১১ সপ্তাহ ধরে আমাদের মজুরি না দেয়ায় অতি কষ্টে জীবনযাপন করছি। পরিবার পরিজন নিয়ে কোনোমতে সেহরি খেয়ে-না-খেয়ে রোজা রাখতে হচ্ছে আমাদের।

ইউএমসি জুট মিলের শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকার ঈদের আগে বকেয়ো মজুরি পরিশোধের ঘোষণা দিলেও এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা এতদিন দোকান থেকে বাকিতে সদাই এনে সংসার চালিয়েছি। এখন সময় মত বকেয়া পরিশোধ না করায় দোকানদাররা বাকিতে সদাই বিক্রি করছে না। তাই পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছি।

পলাশের বাংলাদেশ জুট মিলের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইউসুফ আলী বলেন,দীর্ঘদিন ধরে মজুরি না পেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে গিয়ে আমাদের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই মিল বন্ধ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলনা।

নরসিংদী ইউএমসি জুট মিল শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, সময়মতো পাট না কেনায় জুটমিলগুলোকে লোকসান  গুণতে হচ্ছে। আর এর মাসুল গুণতে হচ্ছে শ্রমিকদের।

নরসিংদী ইউএমসি জুট মিলের মহা-ব্যবস্থাপক গাজী শাহাদাত হোসেন বলেন, শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেই এক সপ্তাহের মজুরি দেওয়া হবে। পাশাপাশি ঈদের আগে এক সপ্তাহের মজুরি দেয়া হবে। তবে সব বকেয়া মজুরি দিতে হলে সরকার থেকে বরাদ্দ দিতে হবে। অন্যথায় মজুরি দেওয়া সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads