• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
জামালপুরে সড়ক নেই যেই গ্রামে

জামালপুরে সড়ক বিহীন গ্রাম নাওভাঙ্গা চর

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

জামালপুরে সড়ক নেই যেই গ্রামে

  • আবদুল লতিফ লায়ন, জামালপুর
  • প্রকাশিত ২৭ মে ২০১৯

চারপাশ ব্রহ্মপুত্রের শাখা প্রশাখায় ঘেরা। মাঝখানে লোকালয়। বন্যার সময় দুর থেকে দেখলে এটাকে একটা দ্বীপের মতো দেখায়। শুষ্ক মৌসুমে এটি একটি চর বসতি। নাম নাওভাঙ্গা চর। চরটি নগরে পাজারের অংশ হয়েও নগরীর সাথে সংযোগ সড়ক না থাকায় যুগ যুগ ধরে গ্রামটি নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিক থেকে বাংলাদেশ যখন বিশ্বের রোল মডেল। তখন দেশের একটি মঙ্গা পীড়িত জেলা জামালপুর পৌরসভার নাওভাঙ্গা চরে তার কোনে ছাপ পড়েনি। অবকাঠামোগত উন্নয়ন কি জানে না এ গ্রামের মানুষ। নেই সড়ক, নেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্রীজ, কালবার্ট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং অন্যান্য নাগরিক অনুসঙ্গ। এ যেন বাতির নীচে অন্ধকার।

এ ব্যাপারে নাওভাঙ্গা চর গ্রামের একজন বাসিন্দা হইবর শেখ (৫৫ ) বলেন, আমরা জামালপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এটা শুধু আমরা ভোট দেওয়ার সময় বুঝি। কিন্তু অন্যান্য সুযোগ সুবিধার বেলায় নয়। যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকে এই গ্রামে পৌরসভা বা সরকারি অন্যকোনো সংস্থার উন্নয়ন কর্মকান্ড আমার চোখে পড়েনি। বাপ দাদার কাছে শুনেছি, এই গ্রামে একটি বিশাল ম্যাপের সড়ক রয়েছে। আমরাও দেখেছি। স্বাধীনতার পর সড়কের উপর দিয়ে আমরা খেলাধুলা করেছি, পাশের জেলা শেরপুরের চরাঞ্চলের মানুষ এই সড়ক দিয়ে তাদের কৃষিপণ্য নিয়ে যাতায়াত করেছে। কিন্তু কখনও এই সড়কের উপর এক টুকরো মাটি পরতে দেখেনি। বরং সংস্কার বা পরিচর্যা না থাকায় দিন দিন সড়কটি দখল হয়ে চাপতে চাপতে চিকন হয়ে এখন শুধু পায়ে চলার পথে পরিণত হয়েছে। এর উপর দিয়ে যানবাহন তো দুরের কথা সাইকেল নিয়েও চলাচল করতে পারে না গ্রামের মানুষ।

তিনি আরো বলেন, আল্লাহ না করুন এ গ্রামে যদি অগ্নি দুর্ঘটনার মতো কোনো ভয়াবহ ঘটনা ঘটে তা নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীও ঢুকতে পারবে না।

আরেক বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, আমরা নাওভাঙ্গা চরের মানুষ নানা প্রাকৃতিক দৃর্যোগ প্রতিকূলতার শিকার । সম্প্রতি বন্যায় ও ভাঙ্গনে এ গ্রামের একাংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বর্তমানে মাজারের সামনে লোকালয়ের বড় অংশের বসবাস। এ অংশে অন্ততঃ ২শতাধিক পরিবার বসবাস করে। কিন্তু নগরের বসবাস করেও শুধু একটি সংযোগ সড়ক না থাকায় আমরা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা অবহেলিত। আমাদেরকে চরের মানুষ ভেবে তাচ্ছিল করা হয়। আমরা কোনো দাবি দাওয়া বা অধিকার আদায়ের জন্য গেলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আমাদেরকে দুর দুর করে। সড়ক ছাড়াও এ গ্রামে নেই স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা।

একটি সড়কবিহীন গ্রামের মানুষের জীবন যাত্রার মান কত দুর্বিষহ ও বঞ্চনার হতে পারে তার জ্বলন্ত প্রমাণ নাওভাঙ্গা চর।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads