• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
গোদাগাড়ীতে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ৫২ ভেজাল পণ্য

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

গোদাগাড়ীতে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ৫২ ভেজাল পণ্য

  • প্রকাশিত ২৭ মে ২০১৯

আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত সেই ৫২টি ভেজাল পণ্য এখনো রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাজারে অহরহ বিক্রি হচ্ছে। নিষিদ্ধ এসব পণ্য সম্পর্কে সচেতন না হওয়ার কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

গত ১৩ মে এসব মানহীন পণ্য বাতিল ঘোষণা করে ১০ দিনের মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

আজ সোমবার উপজেলার গোদাগাড়ী, মহিশালবাড়ী, রেলবাজার, বিদিরপুর, প্রেমতলী, রাজাবাড়ীহাট,কাকনহাট, বাসুদেবপুর, সুইজগেট, কামারপড়াসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সেই ৫২টি ভেজাল পণ্য এখনো দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে ভিন্ন ভিন্ন অভিমত।

উপজেলার বেশিরভাগই বিক্রেতাদের দাবি, আদালতের নির্দেশনার বিষয়ে তাদের সরকারিভাবে বা বাতিলকৃত সেই ৫২টি মানহীন পণ্য কোম্পানির পক্ষ থেকে কোনো কিছুই জানানো হয়নি। আর ক্রেতারা কিনছেন বলেই তারা সেসব পণ্য এখনো বিক্রি করছেন। তবে কিছু বিক্রেতা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আদালতের সেই নির্দেশনার বিষয়ে অবগত থাকার কথা স্বীকার করলেও তাদের কাছে কোনো নির্দেশনা না আসায় এখনো সেসব পণ্য বিক্রি করছেন।

ক্রেতা-বিক্রেতারা বলেন, আদালতের বাতিল ঘোষণা করা ৫২ পণ্যগুলোর বিষয়ে বেশিরভাগই মানুষ জানেন না।

উপজেলার পিরিজপুর এলাকার মুদি দোকানদার বাবলু বলেন, ৫২টি পণ্য বাতিলের কথা শুনেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পাইনি। কোন ৫২ টি পণ্য বাতিল করা হয়েছে তার নাম জানি না। যে কারণেই কাস্টমাররা চাইলে আমি তো বিক্রি করবই। তবে নির্দেশনা এলে সেসব পণ্য বিক্রি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেব।’

রাজাবাড়ীহাট এলাকার এলাকার এক ক্রেতা নয়ন বলেন, ‘ভেজাল পণ্যগুলো বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা দিলেও আদালতের আদেশ পালন করছেন না কোনো দোকানদাররা। যে কারণে ভেজাল পণ্যগুলো দোকান থেকে অপসারণের জন্য আইন প্রয়োগকারী প্রশাসনের সব সংস্থা  কাজ করলে নিষিদ্ধ ঘোষিত বাজারে বিক্রি বন্ধ হয়ে যেত। একযোগে প্রশাসনের সব সংস্থার দ্রুত হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন।’

জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর রাজশাহীর সহকারী পরিচালক অপূর্ব অধিকারী সাংবাদিকদের জানান, ‘প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে। ভোক্তা ও বিক্রেতাদের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধের ঘাটতি থাকায় আদালতের নির্দেশনা তারা উপেক্ষা করে চলেছে। মানুষের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি হলে এ বিষয়ে অন্তত অভিযানের প্রয়োজন পড়ত না।

আদালতের বাতিল ঘোষণা করা ৫২টি পণ্য হলো প্রাণের হলুদ গুঁড়া, ফ্রেশের হলুদ গুঁড়া, মোল্লা সল্টের আয়োডিন যুক্ত লবণ, প্রাণের কারি পাউডার, ড্যানিশের কারি পাউডার, সিটি অয়েলের সরিষার তেল, গ্রিন ব্লিচিংয়ের সরিষার তেল, শমনমের সরিষার তেল, বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের সরিষার তেল, কাশেম ফুডের চিপস, আরা ফুডের ড্রিংকিং ওয়াটার, আল সাফির ড্রিংকিং ওয়াটার, মিজানের ড্রিংকিং ওয়াটার, মর্ণ ডিউয়ের ড্রিংকিং ওয়াটার, প্রাণের লাচ্ছা সেমাই, ডুডলি নুডলস, শান্ত ফুডের সফট ড্রিংক পাউডার, জাহাঙ্গীর ফুড সফট ড্রিংক পাউডার, ড্যানিশের হলুদের গুঁড়া, এসিআইয়ের ধনিয়ার গুঁড়া, বনলতার ঘি, পিওর হাটহাজারী মরিচ গুঁড়া, মিষ্টি মেলার লাচ্ছা সেমাই, মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, মিঠাইয়ের লাচ্ছা সেমাই, ওয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাই, এসিআইয়ের আয়োডিনযুক্ত লবণ, কিংয়ের ময়দা, রূপসার দই, মক্কার চানাচুর, মেহেদীর বিস্কুট, বাঘাবাড়ীর স্পেশাল ঘি, নিশিতা ফুডসের সুজি, মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, মঞ্জিলের হলুদ গুঁড়া, মধুমতির আয়োডিনযুক্ত লবণ, সান ফুডের হলুদ গুঁড়া, গ্রিন লেনের মধু, কিরণের লাচ্ছা সেমাই, ডলফিনের মরিচের গুঁড়া, ডলফিনের হলুদের গুঁড়া, সূর্যের মরিচের গুঁড়া, জেদ্দার লাচ্ছা সেমাই, অমৃতের লাচ্ছা সেমাই, দাদা সুপারের আয়োডিনযুক্ত লবণ, মদিনার আয়োডিনযুক্ত লবণ ও নুরের আয়োডিনযুক্ত লবণ ডানকানের ন্যাচারাল মিনারেল ওয়াটার, আরার ডিউ ড্রিংকিং ওয়াটার, দীঘির ড্রিংকিং ওয়াটার।

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads