রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পাচারের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে দুই মেয়ে শিশু। দরিদ্র পরিবারের এ শিশু দুইটির একজনের বাড়ী চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা এবং অপরজনকে ঢাকার মিরপুর থেকে আনা হয়েছিল। স্থানীয়দের ধারণা, তাদেরকে দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীতে বিক্রির চেষ্টা করা হচ্ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাত ৯টার দিকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর সামনে রেল স্টেশন এলাকায় ১১/১২ বছর বয়সী একটি মেয়েকে অনেক সময় ধরে বসে থাকতে দেখা যায়। এ সময় স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষার্থী শিশুটির সঙ্গে কথা বললে সে জানায়, আমরা ঢাকার মিরপুর-২ এলাকায় ভাড়ায় থাকি। বাবা রিক্সা চালক। তার চাচাতো ভাই স্বপন তাকে চাচা বাড়ীতে বেড়াতে নেয়ার কথা বলে এখানে নিয়ে আসে। কিন্তু অনেক সময় ধরে সে আমাকে এখানে বসিয়ে রেখে অন্যত্র গেছে। এ অবস্থায় ওই স্কুল ছাত্রের সন্দেহ হলে সে তার পরিচিত এক এনজিও কর্মীকে খবর দেয়। তারা এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে রাখে এবং গোয়ালন্দ ঘাট জিআরপি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
স্থানীয়দের ধারণা, শিশুটির চাচাতো ভাই স্বপন তাকে যৌনপল্লীতে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসে এবং স্টেশনে বসিয়ে রেখে দর-দাম মেটাতে যৌনপল্লীর ভিতর নারী ব্যবসায়ীদের কাছে যায়।
গোয়ালন্দ ঘাট জিআরপি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সেলিম মিয়া জানান, শিশুটি তার পরিচয় ঠিকমত বলতে পারছে না। যে ঠিকানা দিয়েছে সে অনুযায়ী ঢাকার মিরপুরে খোঁজ নিয়ে তার পরিচিত কাউকে পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় রাজবাড়ী জিআরপি থানায় সাধারণ ডায়েরী করে শিশুটিকে রাজবাড়ী সরকারি শিশু সদনে স্থানান্তরের চিন্তা করা হচ্ছে।
এদিকে সোমবার সকালে দৌলতদিয়া হতে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া অন্য এক শিশুকে উদ্ধার করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ। সে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দরিদ্র কৃষকের মেয়ে। থানায় আলাপকালে সে জানায়, আজগর আলী নামের ৩ সন্তানের জনক তাকে ঢাকায় চাকরী দেওয়া ও বিয়ে করার কথা বলে বাসযোগে রবিবার বিকেলে দৌলতদিয়া নিয়ে আসে। সেখানে নেমে এক হোটেলে খাবার খেতে গেলে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। তাদের দুজনের এলোমেলো কথায় গড়মিল পেলে আটক করে স্থানীয় একটি এনজিও অফিসে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার ও আজগর আলীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ থানার অপারেশন অফিসার কামরুল হাসান জানান, এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
