পাঁচ বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছিলেন হাঁসের খামার। নড়াইল শহরের মহিষখোলা-আলাদাতপুর এলাকার খামারটিতে ছিল দুই হাজার হাঁস। আশা ছিল, খামারটি ঠিকঠাক মতো দাঁড়ালে এটাই হবে তাদের আয়ের প্রথম ও প্রধান উৎস। কিন্তু চিকিৎসকের ভুলে তাদের সে স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে যাচ্ছে। খামারিরা অভিযোগ করেছেন, চিকিৎসকের ভুলে তাদের খামারের ১২০০ হাঁস মারা গেছে।
নড়াইল পৌরসভার আলাদাতপুর এলাকার গোলাম মোস্তফা চার বছর ওমানে থাকার পর দেশে ফেরত আসেন। এরপর থেকে কোনো কাজ না থাকায় থেকেই বেকার বসেছিলেন। কী করা যায় তা নিয়ে বাল্যবন্ধু মঞ্জুরুল হক, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, ইমরান শেখ, মিন্টু শেখের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। একপর্যায়ে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেন বড় আকারে একটি হাঁসের খামার গড়বেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মোস্তফার পতিত জমিতে ধারদেনা করে তারা খামারটি গড়ে তোলেন।
মঞ্জুরুল ও সেন্টু বলেন, খামারের নাম দিয়েছি ফ্রেন্ডস ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। হাঁসের খামার সফল হলে আমরা আরো বেশ কিছু কর্মকাণ্ড করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। গত ৬ মে নেত্রকোনা থেকে দুই হাজার হাঁসের বাচ্চা নিয়ে আসি। বাচ্চাগুলোর বয়স ২৬ দিন হওয়ার পর ২-১টি বাচ্চা অসুস্থ হলে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মারুফ হোসেনের কাছে যাই। তিনি একটি অসুস্থ হাঁসের বাচ্চা দেখে ওষুধ লিখে দেন। সেই ওষুধ খাওয়ানোর পর পুরো খামারে মড়ক শুরু হয়। হাঁসগুলো মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে ধীরে ধীরে মারা যেতে শুরু করে। একে একে ১২শটি হাঁস মারা যায়। ডাক্তার মারুফকে বিষয়টি জানালে তিনি ওষুধ পরিবর্তন করে দেন। পরে ওষুধ খাওয়ানোর পর কিছু হাঁস সুস্থ হয়।
এ ব্যাপারে ডা. মারুফ বলেন, খামারিদের প্রশিক্ষণের অভাব থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমার কাছে আসার পর একটি হাঁসের ময়নাতদন্ত করে ওষুধ দিয়েছিলাম। পরে অবস্থা আমাকে জানালে ওষুধ পাল্টে দেই। পরবর্তীতে ওই খামারের কেউ আর যোগাযোগ করেনি। নড়াইল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের (মহিষখোলা) কাউন্সিলর কাজী জহিরুল হক বলেন, পাঁচ বেকার যুবকের হাঁসের খামার গড়ে তোলার সময় আমার পক্ষে যতটুকু সাহায্য করা সম্ভব করেছি। মাঝে মধ্যে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। কিন্তু হাঁস মারা যাওয়ায় তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকদের আরো দায়িত্বশীল হওয়ার অনুরোধ জানান।
