• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
পানি নেই, মাছও নেই চলনবিলে

ছবি : সংগৃহীত

সারা দেশ

পানি নেই, মাছও নেই চলনবিলে

অলস সময় কাটছে জেলেদের

  • নাটোর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৬ জুলাই ২০১৯

আষাঢ় মাস, ভরা বর্ষা মৌসুম। পানিতে ভরপুর থাকার কথা থাকলেও চলনবিলজুড়ে নেই কোনো পানির চিহ্ন। অথচ এ সময় চলনবিল থাকে তার চিরচেনা রূপ ধারণ করে। সেই সঙ্গে জেলেরাও থাকে মহা আনন্দে। ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়ে জেলেদের জালে। কিন্তু পানির অভাবে এখন অলস সময় পার করছেন তারা। নেই পানি, নেই কোনো মাছও। অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে এসব জেলের জীবন।

বাংলাদেশে আষাঢ়-শ্রাবণ মিলে বর্ষা ঋতু। আর বর্ষা মানেই মুষলধারে বৃষ্টি, চলনবিলের খালবিল পানিতে থৈ থৈ করে। এ যেন এক চিরচেনা দৃশ্য। অথচ আজ আষাঢ় মাসের ২১ তারিখ। এই মাঝবর্ষাতেও মিলছে না বৃষ্টির দেখা, নেই চলনবিলের খালে একটু পানিও। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন চলনবিল অঞ্চলের জেলেরা। পানি না থাকলে তারা মাছ ধরবে কীভাবে! হতাশাগ্রস্ত চলনবিলের জেলেদের দেখা যায় বাড়িতে বসে পানির অপেক্ষা করছে কখন পানি আসবে, কখন মাছ ধরবে।

একসময় বর্ষা মৌসুম এলেই চলনবিল পানিতে টইটম্বুর হয়ে যেত। জেলেরা মেতে থাকত মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে মাছ ধরতে। মিলতো নানা প্রজাতির মাছ। সেই মাছ স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে আবার দেশ-বিদেশে রপ্তানি হতো। হাসিখুশিভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে সচ্ছলভাবে দিন কাটতো তাদের। কিন্তু প্রকৃতির এই বৈরী আচরণে জেলেদের মুখে এবার হাসি নেই। তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে পড়েছেন মহাসংকটে। সংসারের চাকা একধরনের অচল হয়ে পড়েছে। এছাড়া এখানে কোনো সরকারি বেসরকারি অনুদানও নেই। এ কারণে চলনবিলে দ্রুত পানি না এলে এ অঞ্চলের জেলেদের দুর্বিষহ জীবন যাপন করতে হবে।

চলনবিলে দীর্ঘদিন ধরে মাছ ধরছেন আক্কাস আলী। তিনি বলেন, একসময় আমাদের চলনবিলে পানি থৈ থৈ করত। কিন্তু এবার মাঝবর্ষাতেও আমরা কোনো বৃষ্টি ও পানি পাচ্ছি না। বর্ষার আগেই আমরা মাছ ধরার জন্য খেয়া জাল, জাকই জাল, ধুন্দি, চাঁই, দোয়ার, পলো, বর্শীসহ সব ধরনের যন্ত্র তৈরি করে রাখি। কেননা বর্ষার আগমন হলেই শুরু হয় আমাদের মাছ ধরার কাজ। আর সেই মাছ ধরেই চলে সবার জীবন-জীবিকা।

এ প্রসঙ্গে গুরুদাসপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবীর জানান, দখল, দূষণ ও অপরিকল্পিতভাবে চলনবিলের খালবিল ব্যবহার করায় আজ এই অবস্থা চলনবিলের। তারপরও এবারের বর্ষায় কোনো বৃষ্টি নেই বললেই চলে। মাঝবর্ষার সময় হলেও এখনো বর্ষার পানির কোনো আনাগোনা নেই। বর্ষা সময়মতো না হলে চলনবিলের জেলেরা সংকটের মধ্যে পড়বে। আমাদের পক্ষ থেকে জেলেদের সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার প্রস্তুতি রয়েছে। তবে বর্ষার পানি এলেই জেলেদের এই দুর্ভোগ থাকবে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads