• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
চাটমোহরে খামারীদের লোকসান দৈনিক ২০ লক্ষাধিক

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মানববন্ধন থেকে দুধ ঢেলে প্রতিবাদ করছে খামারীরা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

চাটমোহরে খামারীদের লোকসান দৈনিক ২০ লক্ষাধিক

  • চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৯ জুলাই ২০১৯

পাবনার চাটমোহর উপজেলার গো-খামারীরা দুধ বিক্রি না করতে পেরে প্রতিনিয়ত লোকসান শুনতে হচ্ছে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা। এভাবে সপ্তাহ ব্যাপী দুধ ক্রয়কেন্দ্র গুলো দুধ সংগ্রহ বন্ধ রাখলে খামারীদের কোটি টাকা লোকসান শুনতে হচ্ছে। গো-খাদ্র্যের অগ্নিমূল্যে বাজারে হঠাং করে দুধ বিক্রি বন্ধ থাকায় খামারীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চাটমোহর পৌর সদরসহ ১১টি ইউনিয়নের সরকারি জরিপে প্রায় ৪’শ গো-খামারী সংখ্যা রয়েছে। জরিপের কাজ এখানো চলছে। তাতে করে গো-খামারীর সংখ্যা আরো বাড়বে। এসকল খামারীদের কাছ থেকে ব্র্যাক, মিল্ক ভিটা, প্রাণ, আকিজ, এসিআইসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দুগ্ধ ক্রয় করেন। গত তিন দিন ধরে এঅঞ্চলে দুধ কেন্দ্রগুলোর গো-খামারীদের কাছ থেকে আর দুধ নিচ্ছে না।

সূত্রে আরো জানা গেছে, প্রাণ কোম্পানী শুধুমাত্র চাটমোহর ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার ২২টি হ্যাবের মাধ্যমে প্রতিদিন ৩২ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করছেন। ব্র্যাক, মিল্ক ভিটা, আকিজ ও এসিআইসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান মিলে প্রতিদিন এ উপজেলায় থেকে প্রতিদিন দুধ সংগ্রহ করছেন প্রায় ৫২ হাজার লিটার। যার বর্তমান বাজার মূল্যে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা।

এদিকে পাবনার জেলায় মোট খামারীর সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬ হাজার। গতকাল সোমবার সকালে রাস্তায় দুধ ঢেলে প্রতিবাদ জানানো ছাড়াও করেছে মানববন্ধন। বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে পাস্তুরিত দুধ বিক্রির কোম্পানী গুলো গো খামারীদের কাছ থেকে দুধ খরিদ না করায় তার প্রভাব পড়েছে। অনেকেই ১০ টাকা লিটার দুধ বিক্রি করে সামান্য হলেও পুজি ফেরত নেবার চেষ্টা করেছে।

এদিকে ব্র্যাক, মিল্ক ভিটা, প্রাণ ও আকিজসহ দুগ্ধ ক্রয় কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম বন্ধ রাখার প্রতিবাদে দুগ্ধ সমবায় সমিতির ম্যানেজারগন ভাঙ্গুড়া বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। এসময় তারা প্রায় এক হাজার লিটার দুধ রাস্তায় ঢেলে প্রতিবাদ জানায়। সোমবার দুপুরে সমিতির নেতা পাথরঘাটা গ্রামের হারুনর রশিদ বলেন এ উপজেলায় প্রতিদিন ৩৫ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে অথচ কোনো কোম্পানিই দুধ ক্রয় করছে না। তাই আমরা খামারীদের দুধ নিয়ে মহাবিপদে পড়েছি। একই সাথে অর্থনৈতিক ভাবে মারাতœক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছি।

মিল্ক ভিটার ভাঙ্গুড়া চিলিং সেন্টারের ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান বলেন, মুলত বিজ্ঞ হাইকোর্টের নির্দেশনার কারণেই আজ থেকে দুধ ক্রয় কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এলাকার খামারীরা জানান, ব্র্রাক চিলিং সেন্টারে ভেজাল দুধ ক্রয় করা হতো বলে অভিযোগ ওঠায় কিছুদিন পুর্ব থেকে এখানে দুধ ক্রয় বন্ধ রয়েছে। বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষার মাধ্যমে বিশুদ্ধ দুধ গুলো ক্রয়ের জন্য মানব বন্ধন থেকে দাবি জানানো হয়।

চাটমোহর উপজেলার চরপাড়া গ্রামের খামারী মোক্তার আলী বলেন, তার খামারে প্রতিদিন একশ পচিশ লিটার দুধ উৎপন্ন হয়। এ দুধ বিক্রি করে খামারের খরচ চালানো হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন দুধ খরিদ বন্ধ থাকলে পুজি হারিয়ে পথে বসতে হবে। তিনি আরো জানান, দুধে মানব দেহের ক্ষতিকর উপাদান দুধ খরিদ বন্ধ রাখলে নিরসন হবে না। দুধে এ উপাদান গুলোর উপস্থিতির কারন নির্নয় করে সেটা নিরসনের ব্যবস্থা সমষ্টিগত ভাবে নিতে হবে। তবেই দুধে এ ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি নির্মূল করা সম্ভব হবে। খামারী বেলাল হোসেন জানান, উপায় না দেখে তার খামারে উৎপাদিত দুধ কম দামে শহর ও গ্রামের মিষ্টির দোকানে বিক্রি করছে।

চাটমোহর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ মহির উদ্দিন বলেন, উপজেলায় ৪’শ গো-খামারী রয়েছে। এ সকল খামারী থেকে দুধ উৎপাদন হয়। প্রতিদিন খামারীরা প্রায় ৫০ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন করে। ক্রয়কৃত প্রতিষ্ঠান দুধ সংগ্রহ বন্ধ রাখায় গো-খামারীরা আর্থিকভাবে লোকসানে পড়তে হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads