• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
নরসিংদীতে ডেঙ্গুর হানা, সরকারি হাসপাতালে নেই ডেঙ্গু শনাক্তের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

নরসিংদীতে ডেঙ্গুর হানা, সরকারি হাসপাতালে নেই ডেঙ্গু শনাক্তের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা

  • সুজন বর্মণ, নরসিংদী
  • প্রকাশিত ৩১ জুলাই ২০১৯

নরসিংদীতে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তদ রোগীর সংখ্যা। গত দুই দিনে শুধু সরকারী হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন ২০ জন রোগী। ফলে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে জেলা জুড়ে। ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক বাড়লেও সরকারী সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। নেই রক্তের সেল কাউন্টার মেশিন। তাই রোগীদের বাধ্য হয়েই বেসরকারি ডায়াগনেস্টিক সেন্টারগুলো ছুটতে হচ্ছে।

এদিকে জেলা সিভিল সার্জন বলছেন, ডেঙ্গু জ্বরের রোগীদের সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিয়ে সেবা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

নরসিংদী জেলায় প্রায় ২৫ লাখ লোকের বসবাস। এর মধ্যে জীবিকা ও শিক্ষার প্রয়োজনে ঢাকায় বাস করেন জেলার কয়েক লাখ মানুষ। যাদের মধ্যে অনেকেই মধ্যবিত্ত ও নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই ফিরছেন নিজ গ্রামে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যেই সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় অর্ধ শতাধিক রোগী।

এদিকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দিলেও হাসপাতালের ভেতরের ও বাইরের পরিবেশ নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।

অভিযোগ উঠেছে, ডেঙ্গু জ্বর শনাক্তে রক্তের পরীক্ষার সরকার নির্ধারিত ফি মানছে না ডায়াগনেস্টিক সেন্টারগুলো। পরীক্ষার সবোর্চ্চ ফি ৫০০ টাকার বদলে রোগীদের গুনতে হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকা। এতে গরীব ও হতদরিদ্র রোগীরা বিপাকে পড়ছেন। এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি জেলা সিভিল সার্জন অফিস। উল্টো নরসিংদী সদর হাসপাতাল থেকেই তাদের পাঠানো হচ্ছে  প্রাইভেট ডায়াগনেস্টিক সেন্টারগুলোতো।

সরেজমিনে নরসিংদী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সাধারণ রোগীদের সঙ্গেই রাখা হচ্ছে। হাসপাতালে নিয়ম অনুযায়ী, তাদের সবসময় মশারীর ভিতরে রাখার কথা থাকলেও মাশারী ছাড়াই তাদের বেডে রাখা হচ্ছে। যা খুবই ঝঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন অন্য রোগীরা। তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।

তারা দাবী করছে, ডেঙ্গু রোগীদের মশারীর ভিতরে ও তাদের জন্য আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হোক।

নরসিংদী সদর হাসপতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে, ভবনের সামনে পিছনে প্রত্যেকটা জায়গায়ই পানি জমে আছে। এগুলো নিষ্কাশনের নেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ফারিয়া আক্তারের মা বিলকিস বেগম বলেন, ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বর্তমানে প্রকট আকার ধারন করলেও সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। ফলে অতিরিক্ত অর্থ দিয়েই আমরা বাইরের বেসরকারি ডায়াগনেস্টিক সেন্টারগুলো থেকে ডেঙ্গু শনাক্তের পরীক্ষা করছি।

মাধবদীর রায়পুর মাকের্টের নিরাপত্তা কর্মী নাদিম বলেন. প্রচণ্ড জ্বর ও মাথা ব্যথা নিয়ে সোমবার হাসপাতারে ভর্তি হয়েছি। পরে পরীক্ষা করলে আমার ডেঙ্গু শনাক্ত হয়।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকতা (আরএমও) এম এন মিজানুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের রোগীদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সেবা দেয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ে সরকার নির্দিষ্ট মূল্য তালিকা করে দিয়েছে। এর বাইরে মূল্য বেশি রাখার সুযোগ নাই।

নরসিংদী সিভিল সার্জন(ভারপ্রাপ্ত) ডা. সৈয়দ আমিরুল হক শামীম বলেন. আমাদের হাসপাতালে রক্তের সেল কাউন্টার মেশিন নেই। আমরা দরিদ্র রোগীদের মাইক্রোস্কোপ দিয়ে সেল কাউন্টার করে দিচ্ছি। হাসপাতালে প্রতিটি রোগীকে ২৪ ঘণ্টা মশারীতে রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের বেশির ভাগই ঢাকাতেই আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে শিক্ষার্থী ও চাকুরিজীবিই বেশি। ডেঙ্গু যাতে বিস্তার না করতে পারে এজন্য আমরা সতর্ক রয়েছি।

নরসিংদীকে ডেঙ্গু মুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য বিভাগ মিলে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads