• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
বখাটের অত্যাচারে ক্ষোভে-লজ্জায় প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা

জান্নাতুন নাঈম

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

বখাটের অত্যাচারে ক্ষোভে-লজ্জায় প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা

  • চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৪ আগস্ট ২০১৯

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে এক বখাটের অত্যাচারে ক্ষোভে লজ্জায় ঈদের আগের দিন রোববার নিজ ঘরে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক প্রবাসীর স্ত্রী। এ ঘটনায় ওই বখাটেকে আসামী করে মামলা করেছে ভূক্তভোগীর পরিবার।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, শাহরাস্তি উপজেলার ওয়ারুক পাটওয়ারী বাড়ীর সৌদিপ্রবাসি তৌকির আহমেদ প্রায় ৪ বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করে একই ইনিয়নের রাড়া গ্রামের মশিউর রহমানের মেয়ে জান্নাতুন নাঈমকে। বিয়ের কয়েক বছর পরেই জীবিকার তাগিদে সৌদি চলে যায় তৌকির।

ঈদের আগের দিন রো্ববার দুপরে গোসল করতে যায় জান্নাত। গোসলের সময় একই বাড়ীর হারুন পাটওয়ারীর বখাটে ছেলে হাছান (২২) গোসল খানার ফাঁক দিয়ে জান্নাতের গোসলের দৃশ্য দেখে। এর আগেও বখাটে হাছান জান্নাতকে কয়েকবার খারাপ উক্তি করে বলে জানান জান্নাতের শাশুড়ী পারুল বেগম। পরে বখাটে হাছান জান্নাতকে গোসলের সময়  সব দৃশ্য দেখে ফেলছে বলে জানিয়ে বিভিন্ন বাজে কথা বলে। এ ঘটনাটি মূহুর্তের মধ্যে সে ওই এলাকার কয়েকজন বখাটেওকে জানায়। বিষয়টি জান্নাতের কানে গেলে জান্নাত তার সৌদি প্রবাসী স্বামী তৌকিরকে বিষয়টি ফোনের মাধ্যমে অবহিত করেন। জান্নাত এ ঘটনার বিচার চান। এ কথা বলেই লাইন কেটে দেয়। কিছুক্ষণ পরে নিজ ঘরের আড়ার সাথে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে জান্নাত।

এরপর তার স্বামী সৌদি আরব থেকে কয়েকবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ না হওয়ায় তৌকির তার চাচীকে ফোন করে। চাচী তাদের ১১ বছরের মেয়ে সুরভীকে ঘরে পাঠিয়ে জান্নাতকে ডেকে আনতে বলে। সুরভী জান্নাতকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। তার চিৎকারে বাড়ীর অন্যান্যরা মিলে জান্নাতকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাটি হাজীগঞ্জ থানায় জানানো হলো ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে শাহরাস্তি থানাকে অবহিত করে। শাহরাস্তি থানার এসআই মোজাম্মেমল এসে জান্নাতের মৃতদেহ সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ। ঈদের দিন সোমবার বাদ আসর নিহত জান্নাতের জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে।

জান্নাতুল নাঈম চাঁদপুর সরকারি কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন।

জান্নাতের শাশুড়ী পারুল বেগম জানান, আমি আমার ছেলের বৌকে আমার সাথে বাজারে আসতে বলেছিলাম। সে গোসল না করায় আমি বাজারে আসি। বাজার করার শেষ পর্যায়ে শুনি আমার ছেলে বৌ ফাঁসি দিয়েছে। কিসের মধ্যে কি ঘটলো আমিতো কিছুই জানি না।

তিনি বলেন, আমাদের বাড়ীর হাছান আমার ছেলে বৌকে বিভিন্ন সময় খারাপ কথা বলতো।

শাহরাস্তি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহআলম জানান, এ ঘটনায় নিহত জান্নাতুল নাঈমের শাশুড়ী পারুল বেগম বখাটে হাছানকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। আসামীকে ধরার জন্য অভিযান চলছে। নিহত জান্নাতুল নাঈমের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads