• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ধর্ষিতা শিশুটিই এখন শিশুমাতা

শিশু কোলে শিশু-মা

ছবি : সংগৃহীত

সারা দেশ

ধর্ষিতা শিশুটিই এখন শিশুমাতা

  • বরগুনা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বয়স মাত্র ১০। যে বয়সে বই হাতে স্কুলে যাবে, হইচই করে পাড়া মাতিয়ে তুলবে সেই বয়সে এই শিশুটিকে হতে হলো আরেক শিশুর মা। ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনায়। ধর্ষণের শিকার ১০ বছরের শিশুটি পাঁচ দিন আগে জন্ম দিয়েছে সন্তানের। জন্ম নেওয়া সন্তানকে কোলে নিয়ে চোখের পানি ফেলছে ১০ বছরের শিশুটি। সন্তানের পিতৃ পরিচয় পেতে আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছে শিশুটি ও তার পরিবার।

বরগুনার বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর স্থানীয় সালিশদারদের কাছে বারবার গিয়েও ন্যায়বিচার পায়নি শিশুটি। নির্যাতনের শিকার শিশু ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, নয় মাস আগে শিশুটিকে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামের কালাম ব্যাপারীর ছেলে আক্কাস ব্যাপারী (২৫)। ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে শিশুটিকে হত্যার হুমকি দেয় আক্কাস। প্রায় পাঁচ মাস আগে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ডাক্তার জানান, শিশুটি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি  স্থানীয় সালিশদারদের জানায় পরিবার। তখন শিশুটিকে বিয়ের জন্য আক্কাসকে চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করতে নির্যাতিত শিশুটির পরিবারকে প্রস্তাব দেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। শিশুটির পরিবার এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। 

নির্যাতিত শিশুটিকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় আক্কাস। এরপর নিরুপায় হয়ে মামলা করে শিশুটির পরিবার। গত বুধবার রাতে ছেলেসন্তানের জন্ম দেয় নির্যাতিত শিশুটি। আক্কাস ব্যাপারীর বাবা কালাম ব্যাপারী বলেন, তার সম্মান হানির জন্য এলাকার একটি কুচক্রী মহল এ কথা রটিয়েছে। তা ছাড়া ওই মেয়েটির পরিবার তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলার পর থেকে তার ছেলে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

তবে হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান বলেছেন, শুরু থেকেই আমরা বিষয়টি জানি। এর সমাধানের জন্য ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে বিয়ের জন্য আক্কাস ব্যাপারীকে বলেছি। কিন্তু এতে আক্কাস রাজি হয়নি। পরে নির্যাতিত শিশুটির পরিবারটিকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলেছি এবং সহযোগিতা করে যাচ্ছি। মামলা হওয়ার পর পালিয়ে যায় আক্কাস।

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিবুল হাসান ভুক্তভোগী পরিবারের বাড়ি ঘুরে এসে বলেন, সদ্য মা হওয়া ওই শিশুকন্যার চিকিৎসার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে। তা ছাড়া দরিদ্র ওই পরিবারের জন্য কিছু আর্থিক সহযোগিতারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads