• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
কেরানীগঞ্জে বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে হাউজিং প্রকল্প নির্মণের চেষ্টা

হামলাকারীদের হামলায় ভাংচুর ভুক্তভোগিদের ঘরবাড়ি

ছবি : বাংলদেশের খবর

সারা দেশ

কেরানীগঞ্জে বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে হাউজিং প্রকল্প নির্মণের চেষ্টা

# গ্রামবাসির উপর হামলা #৩০জন আহত # গ্রেপ্তার-৩

  • কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

কেরানীগঞ্জে জোর-পূর্বক ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে জমি জবর দখল করার অভিযোগ উঠেছে অনুমোদনহীন বামনশুর মডেল টাউন নামে একটি প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে শাক্তা ইউনিয়নের পশ্চিম বামনশুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ সময় হামলাকারীদের বাঁধা প্রদান করায় হামলাকারীরা তান্ডব চালিয়ে ১০-/১২টি বাড়ি-ঘর ভাংচুরসহ প্রায় ৩০জনকে মারপিট করে আহত করে। এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে ৩জনকে আটক করেছে।

পুলিশ হামলার ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে মোঃ মনির (৩৮) রাকিবুল ইসলাম (২৮) নাইম হোসেন হৃদয় (২৮) নামে তিনজনকে আটক করেছে।

মামলার বাদী মোঃ আনিসুর রহমান(৩৮) জানান, তিনিসহ তার প্রতিবেশিরা কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন পশ্চিম বামনশুর এলাকার বামনশুর মঢেল টাউন এর পশ্চিম পাশে দীর্ঘ ১৫-২০ বছর যাবৎ জমি ক্রয় করে ঘার-বাড়ি নির্মান করে পরিবারসহ বসবাস করে আসছি। আমাদের জমির পাশে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাজি সালাউদ্দিন লিটন ও তার সাথের লোকজন মিলে তৈরী করছে বামনশুর মডেল টাউন নামে হাউজিং প্রকল্প। এ প্রকল্পের লোকজন বিগত ৪/৫ বছর যাবৎ তাদের জায়গা গুলো হাউজিং প্রকল্পের আওতা ভুক্ত করার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলো। কিন্তু আমরা বড়াবড়ই প্রকল্পের লোকজনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আসছিলাম। এ জন্য প্রকল্পের লোকজন আমাদের বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকিসহ নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে আসছিলো। গত ১০ সেপ্টম্বর দুপুরে অজ্ঞাত নামা প্রায় ১৫০/২০০ জন লোকবল রামদা, লোহার রড, বাশ ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র-স্বস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার ঘর-বাড়িসহ প্রতিবেশিদের বাড়ি জোড় পূর্বক ভেঙে বাড়ির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মানে প্রস্তুতি নিতে আসে। এ সময় তারা বাঁধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তাদের ওপর আক্রমন করে। এ হামলার ঘটনায় মোসাঃ রাশিদা বেগম (৪০), মোঃ সজিব(১৯), মোসাঃ স্মৃতি আক্তার (২০) সহ প্রায় ৩০ জন আহত হয়। আনিসুর রহমান আরো অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারীরা তাদের বাড়ি-ঘর এলোপাতারি ভাঙচুর করে এতে তাদের প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হয়। এছাড়া হামলাকারীরা প্রায় ১০ লাখ টাকার স্বর্নালংকারসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। হামলার ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হামলার ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হাজি সালাউদ্দিন লিটন বলেন. আমাদের এ প্রকল্পটির পরিচালক অনেক। আমাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ থাকার কারনে প্রকল্পের কাজ প্রায় দু’বছর বন্ধছিল। বর্তমানে আমাদের এ প্রকল্পের ভিতরে বড় বড় গাছ পালা জন্ম হওয়ায় সেখানে চুরি ডাকাতি ও মাদক সেবন বেড়ে যায়। যেহেতু আমি এলাকার চেয়ারম্যান এ জন্য আমার কাছে লোকজন অভিযোগ করলে আমি সেখানে শ্রমীক পাঠাই প্রকল্পের অগাছা কাটার জন্য। কিন্তু সেখানে আমরা কখনই কারো ঘর-বাড়ি নেওয়ার প্রস্তাব করি নাই। মারামারি বিষয়টি আমি পড়ে শুনেছি। আর বাদী আনিসুর রহমান কে আমি তাকে চিনিও না। আমাদের দুর্নাম করার জন্য তৃতীয় কোন পক্ষ তাদের সাথে কাজ করছে বলে আমার ধারনা।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বাদীর অভিযোগের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বামনশুর মঢেল টাউন হাউজিং প্রকল্পের লোকজন তার পাশ্ববর্তি এলাকার জায়গা ক্রয় করার জন্য প্রস্তাব দেন। সে প্রস্তাবে ওই গ্রামের লোকজন রাজি না হওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর ভাংচুরসহ মারপিট করে কয়েকজনকে আহত করে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তিনজন হামলাকারীকে আটক করেছি। পরে ভুক্তভোগি আনিসুর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা দিলে গতকাল (আজ) বুধবার দুপুরে আটক তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads