• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
সাড়ে তিন কোটি টাকার সেতুর সুফল পাচ্ছে না ২১ গ্রামের মানুষ

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

সাড়ে তিন কোটি টাকার সেতুর সুফল পাচ্ছে না ২১ গ্রামের মানুষ

  • সুজন বর্মণ, নরসিংদী
  • প্রকাশিত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে ৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মেঘনা নদীর উপর নির্মিত দড়িবালুয়াকান্দি- বরদাকান্দি সেতুর সুফল পাচ্ছে না ২১টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই সেতু নির্মাণ হলেও হয়নি সেতুতে চলাচলের জন্য পরিকল্পিত সড়ক। তাই প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। দুর্ভোগ লাগবে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে সেতুর সড়ক নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসলেও নেওয়া হচ্ছে না কোনো পদক্ষেপ। জমি অধিগ্রহণ না করায় নির্মাণ করা হয়েছে অপরিকল্পিত সড়ক। আর অতি বর্ষণে ভেঙ্গে গেছে সেতুতে চলাচলের সড়কটিও। দ্রুত সময়ের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ করে সড়ক নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নরসিংদীর রায়পুরার আমিরগঞ্জ ও চরআড়ালিয়া ইউনিয়নের ২১টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম মেঘনা নদীর উপর নির্মিত এই সেতু। গ্রামবাসীর দীঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে ৩ কেটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে মেঘনার শাখা নদীর উপর নির্মাণ করা হয় ১৪০ মিটার দড়িবালুয়াকান্দি-বরদাকান্দি সেতু । আর এই সেতুতে যাতায়াতের জন্য ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ৪১০ মিটার ইটের সড়ক। কিন্তু সেতুতে উঠার জন্য পরিকল্পিত সড়ক নির্মাণ না করায় এই সেতু এখন মৃত্যু কূপে পরিণত হয়েছে ।  অন্যদিকে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ও সড়কের পাশে সুরক্ষা দেওয়াল নির্মান না করায় ভেঙ্গে গেছে সড়কটিও। জরুরি রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া, বাজারে মালামাল আনা নেওয়াসহ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত পোহাতে হয় নানা দুর্ভোগ।

নরসিংদী সরকারি কলেজে অর্নাসে অধ্যয়ণরত রনি মিয়া বলেন, সেতু নির্মাণের পর ভেবেছিলাম আমাদের যাতায়াতের দুর্ভোগ লাঘব হবে।আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারবো। কিন্তু সেতুর সঙ্গে পরিকল্পিত সড়ক না থাকায় আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রায়ই সেতুতে যানবাহন পারাপার হতে গিয়ে ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।

হাসনাবাদের বাসিন্দা রাসেল আহমেদ বলেন, জমি অধিগ্রহণ না করেই নির্মাণ করা হয়েছে সেতুর অপরিকল্পিত সড়ক। আর নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় ভেঙ্গে গছে সেতুতে চলাচলের ইটের সড়কটিও । যার কারণে শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ, রোগীসহ সবাইকে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

অটোরিকশা চালক জামাল মিয়া বলেন, আমরা গাড়ি নিয়ে সরাসরি সেতুতে উঠতে পারি না।গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে সেতুতে উঠাতে হয়। অনেক সময় সেতুতে উঠা ও নামার সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। যার কারণে সেতু দিয়ে চলাচলের সময় যাত্রীরা ভয় পায়।

আরেক অটোরিকশা চালক আলাউদ্দিন বলেন, সেতু থেকে নামার সময় আমার গাড়ি উল্টে যায়। যার কারণে আমি গুরুতর আহত হই। তিনদিন হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

হাসনাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান বলেন, সেতুর সঙ্গে সড়কের ঢালটি সঠিকভাবে নির্মাণ করা হয়নি। যার কারণে গাড়ি উঠা-নামার সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থ্ নেওয়ার দাবী জানাচ্ছি।

চরআড়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান সরকার বলেন, জমি অধিগ্রহণ করে পরিকল্পিতভাবে সড়কটি নির্মাণ করা হলে সাধারণ মানুষ সেতুর সুফল ভোগ করতে পারবে। আশা করছি প্রশাসন এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সমস্যা সমাধান করবে।

রায়পুরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী শামীম ইকবাল মুন্না বলেন, পল্লী উন্নয়ন ও স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মেঘনার শাখা নদীর উপর এই সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু প্রকল্পে সড়ক এর জন্য কোনো জমি  অধিগ্রহণের কোনো প্রস্তাবনা ছিল না ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads