• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

সারা দেশ

সীমানা নির্ধারণ হচ্ছে ৪ নদীর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

রাজধানী ঢাকার চার নদীর শত বছরের সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে। খুঁটি স্থাপন করে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর সীমানা পুনঃনির্ধারণ করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এই চার নদীর দুই তীরের ২২০ কিলোমিটারে সীমানা খুঁটি স্থাপনের কাজ চলছে। প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব খুঁটি শত বছরের গ্যারান্টি থাকবে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃৃপক্ষের।

বিআইডব্লিউটিএ বলছে, প্রতিটি সীমানা খুঁটি কমপক্ষে ৩০-৩৫ ফুট মাটির নিচে থাকবে, যা আরসিসি ঢালাই করা হবে। মাটির ওপরে দৃশ্যমান হবে খুঁটির বাকি ১৬ ফুট। নদীর দুই তীরে প্রায় ২২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১০ হাজার ৮২০টি সীমানা খুঁটি স্থাপনের কথা রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিটি খুঁটির দাম পড়ছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা করে। আর খুঁটিগুলো আগামী একশ বছর পর্যন্ত টিকে থাকবে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।

বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (ঢাকা নদীবন্দর) এ কে এম আরিফ উদ্দিন বলেন, গত ৬ জুলাই থেকে মূলত সীমানা পিলার স্থাপনের কাজ শুরু হয়। এরপর টেন্ডার প্রক্রিয়ার জন্য কাজ কিছুটা ধীরগতিতে আগালেও বর্তমানে পুরোদমে কাজ চলমান আছে।

এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০টির বেশি সীমানা খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে কাজের গতি আরো বৃদ্ধি পাবে। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি খুঁটি স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে নদী উদ্ধারে ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নদীতীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৬১২.২২ একর জমি উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে ঢাকার চারপাশে ৩৭৮.৬২ একর এবং নারায়ণগঞ্জে ২৩৩.৬০ একর জমি উদ্ধার করে বিআইডব্লিউটিএ। এ সময় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় ১৫ হাজার ৫৯২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ১২ হাজার ৪৭৮টি এবং নারায়ণগঞ্জে ৩ হাজার ১১৪টি উচ্ছেদ করা হয়েছে।

বুড়িগঙ্গা-তুরাগ ও বালু নদী উদ্ধারে গত ২৯ জানুয়ারি বুড়িগঙ্গা নদীর খোলামোড়া ঘাট এলাকা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ। ২৪ জুলাই পর্যন্ত তিন পর্বে মোট ৫০ কার্যদিবস অভিযান পরিচালনা করে বিআইডব্লিউটিএ।

নদী তীরভূমির ১৫৭ কিলোমিটার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ৪ হাজার ৭৭২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এ সময় উদ্ধার হয় তীরভূমির ১২১ একর জায়গা। যা প্রায় অর্ধশত বছর ধরে তীরভূমিতে বসবাসকারী, বিভিন্ন কোম্পানির দখলে ছিল।

উচ্ছেদকৃত স্থাপনার মধ্যে রয়েছে ৭২৫টি পাকা ভবন, ৯৮৬টি আধা পাকা ভবন, ৩২১টি সীমানা দেয়ালসহ ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৩ হাজার ৫৭৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে নদীর ৯১ একর জায়গা অবমুক্ত করা হয়েছে বলে জানায় বিআইডব্লিউটিএ।

এ ছাড়া জরিমানার মাধ্যমে আদায় হয়েছে ১০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। উচ্ছেদকৃত মালামাল নিলামে বিক্রি করে আরো ১০ কোটি ৮২ লাখ ৩২ হাজার ৪০০ টাকা আদায় হয়েছে। নদী দখলের কারণে ২২ জনকে আসামি করে ছয়টি মামলাও করেছে অভিযান পরিচালনাকারী সংস্থাটি।

নদী রক্ষায় নৌমন্ত্রণালয়ের প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্পের মধ্যে এই সীমানা খুঁটি স্থাপন একটি অংশ। এরপর শুরু হবে নদীর পাড় বাঁধাই, ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ, বনায়ন, তিনটি ইকোপার্ক, ছয়টি পন্টুন, ৪০ কিলোমিটার কি-ওয়াল, ১৯টি আরসিসি জেটি, ৪০টি স্পার্ড ও ৪০৯টি বসার বেঞ্চ নির্মাণকাজ। যা ২০২২ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads