• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
জন্মান্ধ মনোহর আলী পরিবারের দায়িত্ব নিলেন রফিকুল ইসলাম

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

জন্মান্ধ মনোহর আলী পরিবারের দায়িত্ব নিলেন রফিকুল ইসলাম

  • মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ, চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

এক জনম দুঃখী মনোহর আলী। চাঁদপুরের শাহরাস্তির সূচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে তার বাস করেন। জন্মগতভাবেই অন্ধ মনোহর আলী ভিক্ষা করেই তার জীবন চালাতেন। ৩ মেয়েকে নিয়ে থাকেন একটি ঝুঁপড়ি ঘরে। আপনজন বলতে স্ত্রী আশরাফী বেগম, ৩ মেয়ে জ্যোৎস্না, সালমা, নাজমা। গত কয়েকদিন ধরেই মনোহর আলীর দূর্দশা নিয়ে লেখালেখি হচ্ছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে। এক পর্যায়ে সংবাদকর্মীদের বদৌলতে ঝুঁপড়ি ঘরে অন্ধ মনোহর আলীর বসবাসের বিষয়টি ভাইরাল হয়ে পড়লে চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনের সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম’র নজরে আসে।

রফিকুল ইসলাম স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরিন আকতারকে অন্ধ মনোহর আলীর বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে বলেন। ইউএনও মনোহর আলীর খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে সত্যই একজন অসহায়, খুবই দুস্থ্য। তারপরই সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। সংসদ সদস্যের নির্দেশে ইউএনও শিরিন আকতার তাকে কিনে দেয় চাল, ডাল’সহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য। দিলেন নগদ ৫ হাজার টাকা।

রোববার সকালে মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম সরাসরি সেই মনোহর আলী ও তার পরিবারকে দেখতে যান শোরসাক গ্রামে। সেখানে অন্ধ মনোহর আলী সংসদ সদস্য তার ঘরে আসলে তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ সময় রফিকুল ইসলাম তার সঙ্গে আগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরিন আকতার, পৌর মেয়র আলহাজ¦ আবদুল লতিফ মিয়া, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান মিন্টু, ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মজুমদার সহ নেতা-কর্মীদের কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

অন্ধ মনোহর আলী তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, অনেক বছর ধরে খুবই কষ্টে আছি। কেউ কখনো খোঁজখবর নেয়নি। আপনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমারা আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ আপনার সহায় হউক। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যও হাত তুলে দোয়া করেন।

মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম অন্ধ মনোহর আলীকে আশ্বস্ত করে বলেন, আপনার জন্য ৩ শতাংশ জায়গা কিনে একটি বাড়ী করে দেওয়া হবে, আপনার ২ মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে এবং যেই পর্যন্ত আপনার বাড়ী না হবে সেই পর্যন্ত আপনি বাসা ভাড়া থাকবেন, সেই থাকা আমরা আপনাকে দেব।

এ সময় সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম অন্ধ মনোহর আলীর হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং তার ঝুঁপড়ি ঘরে ডুকে কিছু সময় অবস্থান করেন।

মেজর অব. রফিকুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, আমরা জনগনের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। জনগণের খোঁজ খবর নেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের আনাচে কানাছে অনেক মনোহর আলী পড়ে আছে। বঙ্গবন্ধ কন্যা শেখ হাসিনার দেশের মানুষের দূঃখ কষ্ট লাগবে কাজ করছে। সেখানে একজন মনোহর আলী স্ত্রী সন্তান নিয়ে এভাবে দুঃখ কষ্টে থাকবে তা মেনে না যায় না। আমরা তাকে জায়গা কিনে প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরূপ একটি ঘর প্রদান করবো।

তিনি সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার গ্রাম-গঞ্জের এসব চিত্র তুলে ধরবেন। অসহায়দের পাশে থাকবেন। আপনাদের লেখনির মাধ্যমে গ্রাম-গঞ্জের অবহেলিত চিত্র উঠে আসবে।

একই দিন দুপরে হাজীগঞ্জে শেখ হাসিনার উপহার আশ্রহয়ণ প্রকল্প-২ ‘যার জমি আছে, ঘর নেই’ প্রকল্পের আওতায় ২৪০জন গৃহহীন পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি তুলে দেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads