• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
কুড়িগ্রামে অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি

বিক্রি করে দেওয়া সেই শিশু সন্তান

সারা দেশ

কুড়িগ্রামে অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি

  • কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৬ অক্টোবর ২০১৯

কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে অভাবের তাড়নায় চারদিন বয়সী এক শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। শিশুটির বাবা মাহবুবুর রহমান তার স্ত্রীকে না জানিয়ে গোপনে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে সন্তানকে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালের দিকে ওই শিশুকে বিক্রি করে দেয়ার একদিন পর শনিবার বিকালে থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে শিশুটি উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি উপজেলার টাঙ্গালিয়া পাড়া গ্রামের।

সন্তানকে হারিয়ে অসহায় মা রোকসানা খাতুন থানা পুলিশে অভিযোগ করে তার সন্তানকে উদ্ধার করার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন তার স্বামী মাহবুবুর রহমান।

তিনি লোক মারফত তার স্ত্রীর কাছে তালাক দেয়ার খবর পাঠিয়ে দেন। হুমকি দিয়ে বলে দিয়েছেন ‘তোকে (স্ত্রী) আর আমি নিব না। দ্রুতই তালাকের কাগজ পেয়ে যাবি।’

শিশুটির মা’র কাছ থেকে জানা গেছে, রৌমারী উপজেলার কর্তিমারী এলাকার আকবর হোসেন নামের এক নিঃসন্তান দম্পতি চার হাজার টাকায় শিশুটিকে কিনে নেয়। বিষয়টি থানা পুলিশে খবর যাওয়ার পর পুলিশ তৎপরতা শুরু করে। এ অবস্থায় ভয়ে তারা শিশুটিকে রাজিবপুর থানায় পাঠিয়ে দেয়।

গ্রামবাসীরা জানায় গেছে, মাহবুবুর রহমান প্রথম স্ত্রী থাকার পরও দ্বিতীয় বিয়ে করে। তার জমাজমি সম্পদ বলতে কিছুই নেই।

শিশুটির মা রোকসানা খাতুন বলেন, ‘আমার বিয়ে হয়েছে এক বছরের বেশি সময় আগে। বুধবার আমার প্রথম সন্তান জন্ম নেয়। তার নাম রেখেছি ইসমাইল হোসেন।

শুক্রবার আমার স্বামী বাবার বাড়িতে এসে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে আমাকে বলে প্রসূতি মা ও নবজাতক শিশুকে সরকার ভাতা দেয়। তাতে নাম লেখাতে হবে কইয়া সন্তানকে কোলে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। সকাল পার হইয়া দুপুর হয় কিন্তু আমার সন্তানকে নিয়া বাড়িতে আইসে না। সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে আইসা কয় সন্তানকে বেইচা দিছি। এ অবস্থায় আমি কান্নাকাটি করে আমার বাবার বাড়িতে আসি।’

জানা গেছে শিশুটির মা রোকসানা খাতুন দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। একই উপজেলার কাচারিপাড়া গ্রামে তাদের বাড়ি। তার বাবা মোজাম্মেল হক অনেক আগেই মারা গেছে। এক বছরের কিছু বেশি সময় আগে টাঙ্গালিয়া পাড়া গ্রামের মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয়। মাহবুবুর রহমানের পরিবারও দরিদ্র। সে ভ্যান গাড়ি চালিয়ে সংসার চালায়। রোকাসানা খাতুন তার দ্বিতীয় স্ত্রী। ঘটনার পর মাহবুবুর রহমান আত্মগোপনে চলে যাওয়ার কারণে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, শিশুটির মা রোকসানা খাতুন আমাদের কাছে এসে বলার পরই আমরা শিশুটি বিক্রি করার মধ্যস্থতাকারী ফুল চানকে ধরে নিয়ে আসি। এরপর তার দেয়া তথ্য মতে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads