• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
ক্রীড়া ও শরীরচর্চার সমৃদ্ধ কেন্দ্র চলছে অদক্ষ প্রশিক্ষক দিয়ে

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

ক্রীড়া ও শরীরচর্চার সমৃদ্ধ কেন্দ্র চলছে অদক্ষ প্রশিক্ষক দিয়ে

  • জুবাইর উদ্দিন, (চবি)
  • প্রকাশিত ১৪ অক্টোবর ২০১৯

শহীদ শেখ কামাল জিমনেশিয়াম। যেখানে রয়েছে হাই প্যারালাল বার থেকে লো প্যারালাল বার, হরিজেন্টাল বার থেকে উনিভ্যান বার। ব্যালেন্স বিমস্ থেকে শুরু করে সিনথেটিক ম্যাট। ওয়েট লিফটিং সেট। দশ স্টেশনের মাল্টিজিম ও এক থেকে পনের কেজি ওজনের ডামবেল সেট।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় যন্ত্রপাতিতে সমৃদ্ধ এই কেন্দ্রটি। ৩২ হাজার বর্গফুটের উডেন ফ্লোরটি ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী ‘শহীদ শেখ কামাল জিমনেশিয়াম’র নামকরণ এবং আধুনিকায়ণ করেন। তবে চালু হওয়ার ১ বছর ৭ মাস পার হলেও নিয়োগ দেয়া হয়নি কোন প্রশিক্ষক।

শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষকের অভাব মেটান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর একজন কর্মচারী। এতে করে ভুল ব্যবহার এবং অযত্নে অকেজো হয়ে যাচ্ছে জিমনেসিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রশিক্ষক নিয়োগ দিতে আবেদন করেও সাড়া পায়নি বলে অভিযোগ করেন জিমনেসিয়াম কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৬ মার্চ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সদস্য অন্তর্ভুক্তি, ফি ও জিমনেশিয়াম ব্যবহারের নীতিমালা প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় শারীরিক শিক্ষা বিভাগ। বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জনপ্রতি বাৎসরিক ফি ধার্য করা হয় ৫শত টাকা, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জনপ্রতি ১ হাজার টাকা এবং শিক্ষক-কর্মকর্তাদের স্বামী বা স্ত্রী বা সন্তানদের জনপ্রতি ৫শ টাকা। ফি জমা দেয়া প্রত্যেককে জিম কার্ড প্রদান করা হয়।

বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে ১১৭ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী জিমে ভর্তি হয়। ভর্তি হওয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত জিমনেশিয়াম ব্যবহার করার সুযোগ পান। কিন্তু প্রশিক্ষক না থাকায় সঠিক নির্দেশনা না পেয়ে জিমে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। আবার ভুল ব্যবহার এবং অযত্নে অকেজো হয়ে পড়েছে রানিং এবং সাইক্লিং’র মতো গুরুত্বপূর্ণ জিম সামগ্রী। আবার ব্যবহার না জানার ফলে এখনো মোড়ক খোলা হয়নি অনেক যন্ত্রাংশের। জিমনেশিয়ামে মোট ৪০ টির মতো জিম সামগ্রী রয়েছে।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আশরাফ হোসাইন বলেন, জিমনেসিয়ামের বেশকিছু সামগ্রী ভেঙ্গে গেছে, রানিং এবং সাইক্লিং করার মেশিনটি অকেজো হয়ে গেছে। প্রশিক্ষক না থাকায় গতানুগতিক ব্যায়াম করে ফিরে আসি। অনেক সামগ্রী ব্যবহার না জানায় উপর তলায় উঠিয়ে রাখা হয়েছে।

শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক মো. মোয়াজ্জম হোসেন বলেন, সাইক্লিং মেশিনের একটি বেল্ট নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু বেল্টটা এখানে পাওয়া যায় না। তাই এটি বন্ধ আছে। এছাড়া অন্য সব সামগ্রী ঠিক আছে। আমাদের এখানে যে যন্ত্রাংশগুলো আছে সেগুলো অনেকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে না। একজন ব্যবহার করে সেটি সেভাবে চালু রেখে ফেলে যায়, পরের জন সেভাবে ব্যবহার করে। এভাবে তো কোন জিনিস ভালো থাকার কথা না।

প্রশিক্ষক থাকলে তো এমন সমস্যা হওয়ার কথা না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কারও সমস্যা হলে আমরা যারা আছি তারা দেখিয়ে দেই, সেলিম আছে (তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী) ও সবকিছু অনেক ভালো জানে। ও সবসময় সহযোগিতা করে। আর প্রশিক্ষক নিয়োগের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন করেছি কিন্তু প্রশাসন কাউকে নিয়োগ দেয়নি।

যোগ্য প্রশিক্ষক না পাওয়ায় নিয়োগ বন্ধ আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জিমনেসিয়ামের প্রশিক্ষক নিয়োগ পাওয়ার মতো অনেক লোক এদেশে আছে। নিয়োগ কেন হচ্ছেনা সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলতে পারবে।

প্রশিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ বলেন, প্রশিক্ষক নিয়োগের জন্য আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম। তেমন আবেদন না পাওয়ায় পদ এখনো খালি আছে। খুব শীঘ্রই আবার বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads