• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
ছেলের আবদার পূরণের সুযোগ পেলেন না আবরারের মা

ফাইল ছবি

সারা দেশ

ছেলের আবদার পূরণের সুযোগ পেলেন না আবরারের মা

  • কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৪ অক্টোবর ২০১৯

চার বছর হয় আমি ওকে ঢাকায় পাঠিয়েছি। একবার বাদে আমি প্রতিবারই ও চলে যাওয়ার সময় ওর জন্য চালের রুটি ও মুরগির মাংস রান্না করে দিয়েছি। কারণ, জার্নির পরে ও ক্লান্ত হয়ে পড়বে, তখন বাইরে গিয়ে খেতে চাইবে না। এজন্য প্রতিবার ও যাওয়ার সময় আমি ওকে রাতের খাবার রান্না করে দিতাম। কুষ্টিয়ায় শোকের পাথর বুকে নিয়ে এখনও ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া বেগম। নাওয়া-খাওয়া প্রায় ভুলেই গেছেন। ছেলের স্মৃতি রোমন্থন আর আহাজারি করেই কাঁটছে তার দিন। ছেলের শেষ আবদারের কথাগুলো বলতে বলতে অঝোরে ঝরছিলো চোখের পানি।

‘আবরার তার পছন্দের খাবারের কথা খুব একটা বলতো না। তেমন কোনো খাবারের আবদারও করতো না কখনও। কিন্তু শেষবার যখন সে বাড়িতে গেল তখন এর ব্যতিক্রম ঘটেছিল। মুখফুটে মায়ের কাছে একটা আবদার করে বসেছিল সে।’

আবরারের মা জানান, ‘আবরার আসার পরে তিনি ফ্রাইড রাইস রান্না করেছিলেন। খেতে একটু খারাপই হয়েছিল সেটা। কিন্তু আবরার খেয়ে বলেছিল, ‘আম্মু বিশ্বের অন্যতম এক ফ্রাইড রাইস হইছে।’ রোকেয়া বেগম বিষয়টা বুঝতে পেরে বলেছিলেন, ‘এবারের মতো খাও, পরের বার এলে আমি সুন্দর করে রান্না করে দেব।’

আবরারের জন্য ফালুদা বানিয়েছিলেন মা রোকেয়া। দাদাকে সঙ্গে করে আবরার আর তার ছোট ভাই আইসক্রিম দিয়ে খুব মজা করে সেটা খেয়েছিল। তখন আবরার মুখ ফুটে বলে ফেলেছিল, ‘আম্মু তুমি কাস্টার্ড করতে পারো না? আমাদের কাস্টার্ড করে খাওয়াবা।’

এটাই মায়ের কাছে আবরারের শেষ আবদার। মা বলেছিলেন, পরের বার এলে তোমাকে কাস্টার্ড করে খাওয়াব। কিন্তু দিনটা আর এলো না।

ছেলের আবদার পূরণের সেই সুযোগটা আর পেলেন না আবরারের মা। তার আগেই শেষ হয়ে গেল তার ছেলেটা। শেষ হয়ে গেল ছেলেকে নিয়ে তার সমস্ত স্বপ্নগুলোও।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads