• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

সারা দেশ

টেকনাফে নষ্ট হচ্ছে মিয়ানমারের পেঁয়াজ

  • টেকনাফ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৭ অক্টোবর ২০১৯

সারা দেশে পেঁয়াজ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। অথচ মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ পচে নষ্ট হচ্ছে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে। খালাসে দেরি হওয়ায় গত এক সপ্তাহে প্রায় তিন হাজার বস্তা পেঁয়াজ পচে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বাজারে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে ব্যবসায়ীরা কৌশল অবলম্বন করছেন।

টেকনাফ শুল্ক স্টেশন ও স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, এ মাসের শুরু থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে আসা আট হাজার ৪৯৭ দশমিক ১১ টন পেঁয়াজ টেকনাফ স্থলবন্দরে খালাস করা হয়েছে। সর্বশেষ ১৩ অক্টোবর ৫৩ হাজার বস্তা (দুই হাজার ৮০ টন) পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে আনা হয়। এর মধ্যে মোহাম্মদ হাসেমের ৬৪০ ও মোহাম্মদ জব্বারের কাছে ৩২০ টন পেঁয়াজ আসে। বাকিগুলো আসে অন্য ব্যবসায়ীদের কাছে। গত দুদিনে মিয়ানমার থেকে কোনো পেঁয়াজের ট্রলার টেকনাফ বন্দরে আসেনি। বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হলেও স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

মঙ্গলবার সরেজমিন টেকনাফ স্থলবন্দর ঘুরে দেখা যায়, পচা পেঁয়াজ খোলা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। কয়েকজন শ্রমিক এর মধ্য থেকে ভালো পেঁয়াজগুলো খুঁজে বের করছেন। ঘাটে সাতটি পেঁয়াজের ট্রলার এখনো খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।

নূর আলম নামে এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বলেন, ‘অন্যের ট্রলারে করে আমার কিছু পেঁয়াজ আনা হয়েছিল। খালাসে দেরি হওয়ায় পেঁয়াজগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। বন্দরের গাফিলতির কারণে ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ খালাসে দেরি হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের জনবলের অভাবে প্রতিদিন ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসা কমে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘রাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ পেঁয়াজের ট্রাকের ছাড়পত্র দিচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের লোকসান কমাতে সরকারের নজরদারি বাড়ানো দরকার।’

টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা মিয়ানমার থেকে নিম্নমানের পেঁয়াজ আমদানি করায় সেগুলো পচে যাচ্ছে। মূলত বাজারে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে ব্যবসায়ীরা টালবাহানা করছেন। মিয়ানমারে পেঁয়াজের যেসব ট্রলার লোড হয়, সেগুলো এখানে পৌঁছাতে ১০ দিন সময় লাগে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছে।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল হাসান বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষকে মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজের ট্রলার দ্রুত খালাস করে ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। কেন পেঁয়াজ নষ্ট হচ্ছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এদিকে, পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক রাখতে মঙ্গলবার দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনসহ একটি প্রতিনিধি দল টেকনাফ স্থলবন্দর ঘুরে দেখেন এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রবিউল হাসান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads