• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

‘গরিব বলে কি ছেলে হত্যার বিচার পাব না’

  • এমদাদুল হক খান
  • প্রকাশিত ১৯ অক্টোবর ২০১৯

‘আমি গরিব বলে কি আমার ছেলে হত্যার বিচার পাব না। খুনিরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশের সঙ্গে তাদের দহরম-মহরম সম্পর্ক। টাকা দিয়ে খুনিরা সব কিনে ফেলেছে। আমার তো কোনো টাকা নেই। তাই কেউ আমার কথা শোনে না। স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলেকে নিয়েই বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু খুনিরা তাকেও বাঁচতে দিল না। এখন আমি কাকে নিয়ে বাঁচব। এখন একটাই দাবি— আমার মৃত্যুর আগে যেন আমি আমার ছেলের খুনিদের বিচার দেখে যেতে পারি।’ এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছেলে হত্যার বিচার চান এক অসহায় মা।

গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি চত্বরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা রুপিয়া বেগম বাংলাদেশের খবরকে জানান, গত ২৩ জুলাই প্রকাশ্য দিবালোকে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার পূর্ব নোয়ারাই গ্রামের ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এলাকায় তার একমাত্র ছেলে মেহেদী হাসান রাব্বীকে (২২) পিটিয়ে ও কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে গত ২৬ জুলাই ছাতক থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নম্বর ২০)। মামলায় ১৭ জনকে আসামি করা হয়।

প্রথম দিকে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও পরে রহস্যজনক কারণে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না। নিহত রাব্বীর মায়ের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্বে দেন স্থানীয় সন্ত্রাসী লিয়াকত আলী। তার নির্দেশে রাব্বী হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

রুপিয়া বেগম অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী খুনিরা নিয়মিত তাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে তাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে এলাকা ছাড়া তিনি। ছেলে হত্যার বিচারে দাবিতে তিনি ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু ছেলে হত্যার বিচারের বিন্দুমাত্র আশা দেখছেন না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, পুলিশ মামলাটি নিয়ে যথেষ্ট আন্তরিক। সম্প্রতি এই মামলার প্রধান আসামি তারেক হোসেনকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৭ আসামির মধ্যে নয়জন উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন না দিয়ে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে ১০ জন আসামি জেলহাজতে আছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ওসি বলেন, রাজনৈতিক কারণে ও গ্যাং কালচারের বলি হয়েছেন রাব্বী। এর আগে রাব্বী প্রধান আসামি তারেককে ছুরিকাঘাত করেছিল। পরে সেটা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা হয়। কিন্তু তারেক আরো প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। ঘটনার দিন রাব্বীকে একা পেয়ে কুপিয়ে ও রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads