• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
বলাৎকারে রাজী না হওয়ায় নির্যাতন

নির্যাতিত মাদরাসা ছাত্র শাখাওয়াত হোসেন সা’দ (৮)

বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

বলাৎকারে রাজী না হওয়ায় নির্যাতন

  • গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৫ নভেম্বর ২০১৯

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বলাৎকারে রাজী না হওয়ায় শাখাওয়াত হোসেন সা’দ(৮) নামে এক মাদরাসা শিক্ষার্থীকে চোখ-মুখ বেধে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার বিকালে উপজেলার পাগলা থানাধীন বারইহাটি পশ্চিম পাড়া হাফেজিয়া মাদরাসায় ঘটনাটি ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে পরিবারের লোকজন শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। এ ঘটনায় পাগলা থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার বারইহাটি গ্রামের আসাদুজ্জামান তার শিশুপুত্র শাখাওয়াত হোসেন সা’দকে (৮) গত জুলাই মাসে হাফেজী পড়ানোর উদ্দেশ্যে একই গ্রামের পশ্চিম পাড়া হাফেজিয়া মাদরাসায় ভর্তি করেন। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর থেকেই মাদরাসার সহপাঠি বড় শিক্ষার্থীরা শিশুটির পিছনে লাগে ও বলাৎকারের চেষ্টা চালায়। শিশুটি এতে রাজী না হওয়ায় তার উপর নেমে আসে অকথ্য নির্যাতন। তবে নির্যাতনের সময় যাতে কান্নাকাটি করতে না পারে সে জন্য শিশুটির চোখ-মুখ বেধে রাখা হতো। লাঠি-রড দিয়ে পেটানো ছাড়াও মাঝে মাঝে সৌর বিদ্যুতের দুই তার একত্রিত করে দুই হাতে বিদ্যুতের সক দেওয়া হতো। নির্যাতনের কথা কাউকে জানালে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দিতো নির্যাতনকারীরা। গত সোমবার বিকাল ৩টার দিকে মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ রাকিবুল হাসান পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় মাদরাসার বড় শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর, মোস্তাকিন, ইমন, তুহিন, রিফাত, তানহাজ, মাসুম শিশুটিকে ‘নফল নামাজের কথা বলে’ মসজিদের ভিতর ধরে আনে। পরে সবাই মিলে শিশুটির চোখ-মুখ বেধে লোহার রড দিয়ে বেদম পেটায় এবং এ কথা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। নির্যাতনকারীদের বয়স ১২-১৫ বছরের মধ্যে। এ অবস্থায় ভয়ে শিশুটি কাউকে কিছু জানায়নি। আজ সকালে আসাদুজ্জামান ছেলেকে দেখতে গিয়ে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে শিউরে উঠেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

আসাদুজ্জামান বলেন, আমার ফুটফুটে বাচ্চাটিকে হাফেজি পড়ানোর জন্য ওই মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ রাকিবুল হাসানের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাচ্চাটিকে অমানুষের মতো নির্যাতন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য অভিযোগ করবো।

বারইহাটি পশ্চিম পাড়া হাফেজিয়া মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ রাকিবুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাচ্চাটিকে মারধর করা হতো এটা আমি জানতাম না। পরে জেনেছি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন সাগর বলেন, খবর পেয়ে আমি বাচ্চাটিকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। কি জন্য মেরেছে জানিনা। তবে নির্দয় ভাবে মেরেছে, দেখলে যে কারো চোখে পানি এসে যাবে।

পাগলা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিনুজ্জামান খান বলেন, এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads