• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
নিখোঁজ ৯ জেলের লাশ হস্তান্তর

মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া ট্রলারের নিখোঁজ নয় জেলের মরদেহ

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডব

নিখোঁজ ৯ জেলের লাশ হস্তান্তর

  • ভোলা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১২ নভেম্বর ২০১৯

ভোলায় ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে উত্তাল মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া ট্রলারের নিখোঁজ নয় জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

গত সোমবার রাত ৮টার দিকে ভোলা-বরিশাল সিমান্তবর্তী মেহেন্দীগঞ্জের রুকুন্দী এলাকার মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া ট্রলার থেকেই এদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাতেই মেহেন্দীগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে নিহতদের পরিবারের কাছে লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়।

এরা হলেন, চরফ্যাশনের দুলারহাট থানার আবুবকরপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সোলাইমান মাতাব্বরের ছেলে মো. মফিজ মাতাব্বর (৩৫), এই এলাকার নুরুল হকের ছেলে কামাল দালাল (৪০), ওই থানার আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের ইসমাইল খানের ছেলে মো. বিল্লাল (৩৫), আহম্মদপুর এলাকার মোসলেহউদ্দিন মাঝির ছেলে হুমায়ুন কবির (৪০) ও নাইম পাটওয়ারীর ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৫) , উত্তরশিবা এলাকার মজিবল হক মুন্সির ছেলে আব্বাস মুন্সি (৪০) ও জামাল বিশ্বাসের ছেলে রফিক বিশ্বাস (৫৫), নুরাবাদ এলাকার কাদের মোল্লার ছেলে হাসান মোল্লা (৩৮) ও কাদের বেপারীর ছেলে নুরনবী বেপারী (৩০)। এ নিয়ে ওই ট্রলারটিতে থাকা ২৪ জনের মধ্যে জীবিত ১০ জেলে ও মৃত ১০ জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও ট্রলারে থাকা নীল কমল ইউনিয়নের চর যমুনা গ্রামের মো. নাসিম (৪৫) নামের এক জেলে ও জেলেদের সাথে থাক আরও তিন ব্যাক্তির সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে জেলেদের সাথে থাকা তিন জনের কোনো নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

জানা যায় গত ৩০ অক্টোবর মা ইলিশ রক্ষা অভিযান শেষ হওয়ার পর চরফ্যাশনের আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের তোফায়েল মাঝির মাছ ধরার ট্রলার ২১ জেলে নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। মাছ ধরা শেষ হলে ওসই মাছ নিয়ে চাঁদপুর বিক্রি করে গত রবিবার সকালে আর তিন জনকে নিয়ে চরফ্যাশনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এ সময় দুপুরের দিকে ট্রলারটি মেঘনা নদীর ভোলা-বরিশাল সীমান্তবর্তী এলাকা মেহেন্দীগঞ্জের রুকুন্দী পয়েন্টে আসলে ঘুর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। পরে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের সদস্যরা খবর পেয়ে মাঝিসহ ১০ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করে। এবং সন্ধার দিকে মোরশেদ নামের এক জেলের মরদেহ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। কিন্তু ট্রলারে থাকা বাকী ১৩ জনের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের কয়েকটি টিম মেঘনা নদীতে অভিযান চালায়। এবং ডুবে যাওয়া ট্রলারটিও উদ্ধারের চেষ্টা চলে। সর্বশেষ সোমবার সন্ধার পর নদীতে ভাটার সময় ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার করলে সে ট্রলারের কেবিনের মধ্যে ৯ জেলের মরদেহ পাওয়া যায়।

পরে রাতে মেহেন্দীগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে নিহতের পরিবারের কাছে লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়। মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি আবিদুর রহমান ও কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের পেটি অফিসার মো. সোহেল রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান রবিবার ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের কবলে পরে ২৪ জন লোক নিয়ে আম্মাজান-২ নামের চরফ্যাশনের একটি মাছ ধরার ট্রলার ভোলা-বরিশাল সিমান্তবর্তী মেহেন্দীগঞ্জের রুকুন্দী এলাকার মেঘনা নদীতে ডুবে যায়। পরে সেখান থেকে জীবিত ১০ জেলে ও এক জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর পর থেকে কোস্টগার্ডের কয়েকটি টিম মেঘনা নদীতে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে অভিযান চালায়। সর্বশেষ সোমবার রাতে ডুবে যাওয়া ট্রলার থেকে আরও ৯ জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এবং মৃতদেহগুলো থানা পুলিশের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকী নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তারা।

এ দিকে নিহত ১০ জেলের পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানান ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads