গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্সরে মেশিনটি ২ বছর ধরে নষ্ট
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ৫১শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে বিকল হয়ে আছে। এতে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগীরা। এ সুযোগে বাইরের ডায়াগনেস্টিক সেন্টারগুলো অতিরিক্ত টাকা নিয়ে এক্সরে করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মেশিনটি বিকল হয়ে যায়। এরপর কয়েকদফা মেরামতের চেষ্টা করেও চালু করা যায়নি।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১০ সালে ২০ শয্যা থেকে ৫১ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পর এর অবকাঠামোর সম্প্রসারণ ও চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু নতুন মেশিন স্থাপন করা হয়। কিন্তু মেশিনগুলোর প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবলের অভাবে চালু না করায় ধীরে ধীরে অকেজো হয়ে পড়ছে। অথচ স্থানীয় রোগীদের জেলার বাইরে চিকিৎসার জন্য লাখ লাখ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ৫১ শয্যা বিশিষ্ট গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুরুত্ব অনেক। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার হওয়ায় প্রতিদিন গোয়ালন্দ উপজেলাসহ মহাসড়কে ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনার শিকার রোগীসহ পাশের রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর এলাকার অনেক রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসে। যে কারণে প্রতিনিয়তই এখানে এক্স-রে মেশিনটির প্রয়োজন হয়।
হাসপাতাল সংলগ্ন এক ফার্মেসীর মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হাসপাতালের এক্সরে মেশিনটি বিকল থাকায় সরকারিভাবে যে এক্সরেটি করতে ১২০ টাকা লাগে বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তা থেকে আদায় করা হচ্ছে আড়াইশ থেকে ৩০০ টাকা।
হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেডিওলজিস্ট মো. কামরুল হাসান জানান, প্রায় ৩৪ বছর বয়সের এনালগ পুরাতন এক্স-রে মেশিনটি বার বার মেরামত করা হলেও কোনো কাজে আসছে না। মেরামত করার পরদিনই এক রোগীর এক্সরে করা অবস্থায় হঠাৎ শব্দ হয়ে মেশিনটি বন্ধ হয়ে যায়। মেশিনটি চালু অবস্থায় এখানে ভর্তি ও বহির বিভাগ মিলে গড়ে প্রায় প্রতিদিন ২০-২৫ জন রোগীর এক্সরে করা হতো।
তিনি জানান, সপ্তাহ খানেক আগে ঢাকা থেকে অপারেটর এসে মেশিনটি মেরামত করেছে। এক্সরে রিপোর্ট এখনও ভালো আসছে না।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসিফ মাহ্মুদ এ প্রসঙ্গে বলেন, এক্সরে মেশিনটি বিকল থাকার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করলে ঢাকা থেকে কয়েকবার টেকনিশিয়ান এসে কোনমতে চালু করে দিয়ে গেছেন। তবে রিপোর্ট তেমন একটা ভালো আসে না। এ পরিস্থিতিতে একটি নতুন এক্সরে মেশিনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাইরের ডায়াগনেস্টিক সেন্টারে এক্সরে বাবদ রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কেউ নিয়ে থাকলে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।