বিভিন্ন সমস্যার আবর্তে কুমিল্লা কারা প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৯২ সালে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ নগরীর জেলখানার পাশে এটি স্থাপন করে। কারারক্ষি, কারাগার কর্মীদের এবং আশেপাশের সাধারণ মানুষের সন্তানদের লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে স্থাপিত হয় এই বিদ্যালয়টি। কারা কর্তৃপক্ষ পরিচালিত এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে কারা কর্মকর্তা-কর্মচারী, রক্ষীর সন্তানসহ স্থানীয় শিশুরা পড়াশোনা করছে। বিদ্যালয়টিতে কে জি থেকে পঞ্চম শ্রেনীতে ২৭০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
বিদ্যালয়টি ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ভিটি নীচু হওয়ায় বৃষ্টি হলেই মাঠে পানি জমে এবং শ্রেনী কক্ষে পানি প্রবেশ করে। এটিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য কোন শৌচাগার নেই। বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৭ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং চার জন মহিলা। পুরুষদের তিনজনই কারা বিভাগের কর্মচারী। দুইজন সহকারি কারারক্ষি এবং একজন কারা রক্ষী। এরা কারা কর্তৃপক্ষ থেকে বেতন পেলেও নারী শিক্ষকরা আছেন বিপাকে। এরা কারা কর্তৃপক্ষের লোক না হওয়ায় বছরের পর বছর নাম মাত্র বেতনে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের স্বপ্ন একটাই কোন দিন বিদ্যালয়টি সরকারি হলে বেতন ভাতা বাড়বে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নুরজাহান সাথী বলেন, গত ছয় বছর ধরে অল্প বেতনে শিক্ষকতা করছি। বিদ্যলয়টি সরকারি হলে বেতন ভাতা বাড়তো এবং নিয়মিত হতো।
বিদ্যালয়ের আয়ের উৎস শিক্ষার্থীদের থেকে নেয়া বেতনই ভরসা। কেজি থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ৪০ টাকা এবং চতুর্থ শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত মাসিক বেতন ৫০ টাকা নেয়া হয়।
সিনিয়র জেল সুপার জাহনারা বেগম বলেন, বিদ্যালয়টিতে কারাগারের তিন জন কর্মচারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োজিত আছেন। এ ছাড়াও বাইরেও ৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। কারগারের কর্মচারীরা কারাগার থেকে বেতন পেলেও বাইরের শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে পাওয়া বেতন দিয়েই চলছেন। কারাগারের কর্মচারীদের কাছ থেকে কিছু টাকা সংগ্রহ করে তাদেরকে বেতনের সাথে দেওয়া হয়।
স্কুলের মাঠ এবং স্কুলরুমে পানি উঠা সম্পর্কে তিনি বলেন, সমগ্র কারাগারটি রিমডেলিং করা হবে। এ প্রকল্পে বিদ্যালয়টিও আধুনিকায়ন করা হতে পারে। শিক্ষকদের ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষ হয়তো ভালো কোন ব্যবস্থা নেবেন।
