• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে দলিল লিখকদের কর্মবিরতি

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে দলিল লিখকদের কর্মবিরতি

  • কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় সাব রেজিস্ট্রার রহমত উল্লাহ লতিফের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এর প্রতিবাদ জানিয়ে ওই কার্যালয়ের দলিল লিখক ও ভেন্ডার সমিতির সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা চেয়ে সমিতির সদস্যরা মহাপরিদর্শক (নিবন্ধন) বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

কর্মবিরতি কর্মসূচির কারণে সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে দলিল সম্পাদনের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে জমি ক্রেতা ও বিক্রেতারা তাদের দলিল সম্পাদন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি সমিতির ৪৫ জন সদস্য স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আক্তার হোসেন।

অভিযোগের অনুলিপি স্থানীয় সাংসদসহ , আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়।তবে সাবরেজিস্টার রহমত উল্লাহ লতিফ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

লিখিত অভিযোগ ও সাবরেজিস্টার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মো. রহমত উল্লাহ লতিফ গত ১০ অক্টোবর কলমাকন্দায় সাব রেজিস্টার হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকে তিনি স্বেচ্ছাচারিতা ছাড়াও বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন। তার এ কাজে বাধা দিলে তিনি উল্টো দলিল লিখকদের হুমকি দেন। দলিল লিখকদের অভিযোগ, সাব রেজিস্ট্রার রহমত উল্লাহ সাফকাওলাসহ বিভিন্ন দলিল সম্পাদনে প্রতি এক লাখ টাকায় তিন হাজার ১০০ টাকা করে ঘুষ নেন। ঘুষের এই টাকা না দিলে তিনি দলিল সম্পাদনের কাজ করেন না। এছাড়া কমিশনে দলিল করার ক্ষেত্রে সাত থেকে ১৫ হাজার টাকা করে তিনি ঘুষ নেন। কমিশনের সম্পাদিত দলিলে প্রতি লাখে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার টাকা করে আদায় করেন। অথচ আইনে আছে প্রতি কমিশনের দলিল সম্পন্ন করতে ২০০ টাকা এ ছাড়া সাবরেজিস্ট্রার সরেজমিনে পরিদর্শন করলে প্রতি কিলোমিটারে ১০ টাকা ও তার কার্যালয়ের লোক বা পিয়ন পাঠালে ছয় টাকা করে নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তিনি তা মানেননি। শুধু তাই নয় নকল সরবরাহসহ অন্যান্য কাগজপত্র সরবরাহে সরকারি চালান ছাড়াও তিনি অতিরিক্ত এক হাজার টাকা ঘুষ নেন। এছাড়া দলিল লেখক, দলিলের দাতা ও গ্রহিতাদের সঙ্গে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে কলমাকান্দা দলিল লিখক ও ভেন্ডার সমিতির সদস্যরা বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এতে করে জমি ক্রেতা ও বিক্রেতারা তাদের দলিল সম্পাদনে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

উপজেলার দলিল লিখক সমিতির সভাপতি আকতার হোসেন ও সম্পাদক গোপাল তালুকদার লিখিত অভিযোগ করে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান এ অফিসে কর্মরত সাব- রেজিস্ট্রার মো. রহমত উল্লাহ লতিফ অফিসে যোগদানের পর থেকেই স্বেচ্ছাচারিতা,অনিয়ম দুর্নীতি ও বিভিন্ন কাজে দলিল লিখক ও ভেন্ডারদের অযথা হয়রানি করে যাচ্ছেন। আমরা এসব অভিযোগের সরেজমিন তদন্ত ক্রমে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ডাকযোগে বৃহস্পতিবার মহা-পরিদর্শক (নিবন্ধন) ঢাকা বাংলাদেশ বরাবরসহ আমরা বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছি। এতে ৪৫ জন সদস্যের স্বাক্ষর রয়েছে। এ অফিস থেকে সাব-রেজিস্ট্রার রহমত উল্লাহ লতিফ কে প্রত্যাহার করা না পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য আমাদের কর্মবিরতি চলবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাব- রেজিস্ট্রার মো. রহমত উল্লাহ লতিফ প্রতিনিধিকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।আমি কলমাকান্দায় যোগদান করার পর থেকে এই কার্যালয়ে একটি অসাধু শক্তিশালী চক্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাঁরা আমার বিরুদ্ধে এমন অপবাদ দিয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করছেন।

ভারপ্রাপ্ত জেলা রেজিষ্টার জহিরুল ইসলাম নিকট মুঠোফোনে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রতিনিধিকে জানান, কলমাকান্দায় কর্মরত সাব- রেজিস্ট্রার মো. রহমত উল্লাহ লতিফের বিরুদ্ধে দলিল লেখক ও ভেন্ডারদের আনা অভিযোগ আদৌ সত্য নয়। তিনি তার স্ত্রীর অসুস্থতার খবর পেয়ে আমার কাছ থেকে ছুটি নিয়ে বৃহস্পতিবার কর্মস্থল ত্যাগ করেছেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads