নেত্রকোণার কলমাকান্দা পাক-হানাদার মুক্ত দিবস আজ ৭ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জনতার ত্রিমুখী আক্রমণে পাক- হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা টিকতে না পেরে দক্ষিণে নেত্রকোনার দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় এবং মুক্ত হয় কলমাকান্দা উপজেলা।
ওইদিন উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। এ দিবসটি বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন এর জন্য উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড এর যৌথ উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে নেত্রকোণা-১ আসনের সংসদ সদস্য মানু মজুমদার ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল খালেক তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন আজাদ উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সুলতান গিয়াস উদ্দিন জানান, প্রতি বছরের মতো আমরা পাক-হানাদারমুক্ত দিবস উদযাপনের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করেছি। এ সব কর্মসূচীতে উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিক, গণমাধ্যম কর্মী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করবেন।
এ দিবসটি পালনের মধ্যে দিয়ে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর করাসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল খালেক তালুকদার বলেন, মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হক তারা (টাইগার তারা’র) নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই সম্মুখ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুরে পাক-হানাদার বাহিনীর সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। সেদিন শহীদ হন নেত্রকোণার ডা. আবদুল আজিজ, ফজলুল হক, জামালপুরের জামাল উদ্দিন, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার নুরুজ্জামান, দিজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস, ইয়ার মাহমুদ ও ভবতোষ চন্দ্র দাস। এ সকল মহান বীর শহীদদের কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী লেঙ্গুরা এলাকার ১১৭২ নম্বর ভারতীয় সীমান্ত পিলারের কাছে সমাধি দেওয়া হয় ।