• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
দিয়াজের লাশ নিয়ে অপরাজনীতি বন্ধের দাবি ছাত্রলীগের

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

দিয়াজের লাশ নিয়ে অপরাজনীতি বন্ধের দাবি ছাত্রলীগের

  • চবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৯ জানুয়ারি ২০২০

আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে কিছু কুচক্রীমহল। তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর লাশ নিয়ে অপরাজনীতি শুরু করেছে।

আজ রোববার সাংবাদিক সমিতির অফিস কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বগিভিত্তিক সংগঠন বাংলার মুখ। সাংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলার মুখের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক আমির সোহেল।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দিয়াজ ভাইয়ের মৃত্যুর পর থেকে বিভিন্ন সময়ে আমরা এ মৃত্যুর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে লক্ষ্য করেছি দিয়াজ ভাইয়ের লাশ নিয়ে অপরাজনীতি খেলায় মেতে উঠেছে অনেকেই। আমরা তাদেরকে কঠোর হুশিয়ারি করে বলতে চাই আপনারা এবার থামুন। এ অপরাজনীতি থেকে দূরে সরে আসুন না হয় আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো। আমরা দিয়াজ ভাইয়ের সহপাঠী হিসেবে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই দিয়াজ ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে কারও অপরাজনীতি করার সুযোগ নেই। যদি এটা নিয়ে কেউ অপরাজনীতি করে তা যেকোন মূল্যে রুখে দিব।

দিয়াজের মৃত্যুকে হত্য‍াকাণ্ড উল্লেখ করে বিভিন্ন সময় বাংলার মুখের অনুসারী আন্দোলন করলেও এখন তাদের অবস্থান পরিবর্তন কেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জাবাবে আমির হোসেন সোহেল বলেন, দিয়াজ ভাইয়ের মৃত্যুটা রহস্যজনক। এটা হত্যা না মৃত্যু তা প্রমাণ করবে আদালত। কিন্তু এ আইনি বিষয়ের সাথে আমাদের নেতা নাছির ভাইকে জড়িয়ে বিভিন্ন অপরাজনীতি করতেছে কিছু কুচক্রীমহল। আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, বাংলার মুখ পরিবারের সাথে দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর পরিবারের কোন রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই। আমরা আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী এবং নেতার প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল। তবে আমরা বাংলার মুখ পরিবার বরাবরের মতোই দাবি জানাই দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য দ্রুত সময়ের মধ্যে উন্মোচিত হোক। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যদি এ মৃত্যু হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকে তাহলে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাবেক আইন সম্পাদক আবু সাঈদ মারজান, ছাত্রলীগ নেতী জান্নাতুন নাঈমা ও ছাত্রলীগ নেতা আবু সুফিয়ান।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাসে নিজ বাসা থেকে ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এর তিনদিন পর ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেয়া প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়। তার ভিত্তিতে হাটহাজারী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে পুলিশ।

তবে দিয়াজের পরিবার ও তার অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মীরা শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্মাণ কাজের দরপত্র নিয়ে কোন্দলের সূত্র ধরে এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে অভিযোগ করে আসছিল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক ১০ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।

দিয়াজ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মোহাম্মদ আরমান এবং তার বড় ভাই এই মামালার প্রধান আসামি চবি ছাত্রলীগের সে সময়ের সভাপতি আলমগীর টিপুসহ মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সে সময়ের সভাপতি আলমগীর টিপু, ছাত্রলীগ নেতা আবুল মনসুর জামসেদ এবং তাদের অনুসারী রাশেদুল আলম জিসান, আবু তোরাব পরশ, মনসুর আলম, আবদুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমান।

অভিযুক্ত আসামিদের সকলেই চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। দিয়াজ ইরফানও একই নেতার অনুসারী ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads