• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
আসামীকে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে আদালতে নেয়ায় বিক্ষোভ

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

আসামীকে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে আদালতে নেয়ায় বিক্ষোভ

  • গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২০ জানুয়ারি ২০২০

গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে পণ্যবাহি ট্রাক পারাপারে ফেরির টিকিট বুকিংকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান রুবেলকে রবিবার রাতে আটক করে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ।

আজ সোমবার দুপুরে গোয়ালন্দ উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারী গাড়িতে গ্রেফতারকৃত রুবেলকে আদালতে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বাঁধায় রাস্তায় নামিয়ে দিতে বাধ্য হন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চৌধুরী।

এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারী গাড়ি অনৈতিক ব্যবহার ও উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিতর্কিত কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেন।

জানা যায়, গত শুক্রবার (১৭ জানুয়ারী) দিনগত রাতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে পারাপারকারী বিভিন্ন পণ্যবাহি ট্রাকের ফেরির টিকিট বুকিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করে দু’পক্ষ। এই মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডলের ভাগিনা ও উপজেলা ছাত্রলীগের একাংশের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান রুবেলকে রবিবার রাতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চৌধুরী তার সরকারী গাড়িতে করে রুবেলকে নিয়ে আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এদিকে এ খবর জানাজানি হলে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ির গতিরোধের চেষ্টা করে। এসময় গাড়িটি দ্রুত গতিতে চলে গেলে ছাত্রলীগে নেতাকর্মীরা বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলাদিপুর এলাকায় গিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ির নাগাল পায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেপ্তারকৃত রুবেল ও পুলিশ স্কোয়াডকে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

এদিকে এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দ্বারস্থ হন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আলী মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ হোসেন ফকীর, গোয়ালন্দ পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সফিকুল ইসলাম সুজ্জল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তুহিন দেওয়ান, সাধারন সম্পাদক আবির হোসেন রিদয়, পৌর ছাত্রলীগের সবাপতি রাতুল আহমেদ প্রমুখ। এসময় তারা অভিযোগ করেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্ষমতার অপব্যবহার ও সরকারী গাড়ির চরম অপব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে এখনি ব্যবস্থা গ্রহন না করলে জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারে। পরে তারা নেতাকর্মীদের গণস্বাক্ষর গ্রহন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের লিখিত অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীকে আদালতে পাঠানো প্রক্রিয় চলাকালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জানালেন তিনি রাজবাড়ীতে যাবেন এবং তার গাড়িতে আসামীকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাই পুলিশী স্কোয়াডসহ আসামীকে তার গাড়িতে তুলে দেয়া হয়।

উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চৌধুরী জানান, গ্রেপ্তারকৃত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রুবেলকে পুলিশের স্কোয়াডসহ গোয়ালন্দ বাসষ্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে ছাত্রলীগ নেতাদের মারমুখি জটলা দেখে কিছুটা দুরে গিয়ে তাদের নামিয়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে অন্য যানবাহনের তারা রাজবাড়ীর আদালতে যায়।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারী গাড়িতে কোন আসামীকে আদালতে পৌঁছে দেয়া আইন সম্মত নয়। এ নিয়ে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক। এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads