• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
কাঠ ব্যবসায়ির বদলে চা দোকানি জেলে

ভুল করে গ্রেপ্তারকৃত আসামি রফিকুল

ছবি : সংগৃহীত

সারা দেশ

কাঠ ব্যবসায়ির বদলে চা দোকানি জেলে

  • শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২১ জানুয়ারি ২০২০

বনের গাছ কেটে স’মিলে চিরাই করে কাঠ ব্যবসার অপরাধে ২০১৫ সালে মামলা দায়ের করেন উপজেলা বন বিভাগের কর্মকতারা। পরে এ ঘটনায় পুলিশ একাধিক বার ওই মামলার আসামি ধরতে পুলিশ অভিযান চালায়। প্রায় ৫ বছর পরে শুক্রবার রাতে আসামি গ্রেপ্তার করেন শ্রীপুর থানা পুলিশ। তবে অভিযোগ রয়েছে পুলিশ মোটা টাকার বানিজ্য করে কাঠ ব্যবসায়ির বদলে নিরীহ এক চা দোকানিকে গ্রেপ্তার করেছে। নামের মিল থাকার সুযোগে পুলিশ এ নেক্কারজনক কাজ করেছে বলে পরিবার অভিযোগ করেছে। ভুল আসামি গ্রেপ্তারের কারনে নিরীহ চা দোকানি ৫ দিন ধরে জেল খাটছে। এ ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

মামলা সূত্রে জানা যায়, লাইসেন্সবিহীন করাতকলে বনের গজারি গাছ চিরাই করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন রফিকুল ইসলাম নামে এক কাঠ ব্যবসায়ি। পরে এ নিয়ে ২০১৫ সালের ৮ জুলাই শ্রীপুর সদর বিট কর্মকর্তা সহিদুর রহমান একটি মামলা দায়ের করেন। এ সময় কেওয়া পশ্চিম খন্ড গ্রামের বেগুন বাড়ি এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুল ইসলামকে আসামি করা হয়। পরবর্তীতে এ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা শ্রীপুর থানায় পাঠায় আদালত। পরে পুলিশ এ মামলার আসামি ধরতে একাধিক বার অভিযান চালান।

ভুলে গ্রেপ্তারকৃত চা দোকানির নাম রফিকুল ইসলাম। তার বাবার নাম নুর মোহাম্মদ। সে মাওনা মসজিদ মোড় এলাকার বাসিন্দা। তার একটি ছেলে একটি মেয়ে। মেয়েটি বড় আর ছেলেটি এখনো মায়ের দুধ পান করে।

ভুলে গ্রেপ্তারকৃত আসামি রফিকুলের বড় ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই (রফিকুল) মসজিদ মোড় এলাকায় একটি ছোট চা দোকান দিয়ে সংসার চালায়। পরে শুক্রবার বিকালে নিজের দোকানে চা বিক্রিতে ব্যস্ত ছিলেন। পরে একদল পুলিশ এসে চা দোকান থেকে বন মামলার আসামি বলে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান।

তিনি বলেন এ মামলার প্রকৃত আসামি করাতকল মালিক (কাঠ ব্যবসায়ি) রফিকুল ইসলাম। নামের মিল থাকায় আমাদের কোনো কথাই শুনেনি পুলিশ। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন অনেক বার পুলিশকে বলেছি আমার ভাই নির্দোষ। কোনো মামলা নাই। সে কখনো বনের কাঠ কাটেনি। সে নিরীহ চা দোকানি। পুলিশ কোনো কথা শুনেনি।

স্থানীয়রার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন প্রকৃত আসামি রফিকুলের ছোট ভাই মাহবুব পুলিশ নিয়ে নিরীহ চা দোকানি রফিকুলকে ধরিয়ে দেন। এ সময় পুলিশ বিশেষ সুবিধা নিয়ে চা দোকানিকে ধরেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন পুলিশ জনগনের বন্ধু এমন স্লোগান প্রতিষ্ঠিত করতে সরকার প্রচার চালাচ্ছে। এ দিকে পুলিশ যাচাই বাচাই না করেই নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করে। এ ভুলে নিরীহ মানুষ জেল খাটছে।

প্রকৃত আসামি রফিকুল ইসলাম জানান আমার নামে বনের একটি মামলা (মামলা নং ২০৫) ছিল। এ মামলায় আমি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছি। তিনি বলেন পুলিশ নামের মিলে ভুল আসামি গ্রেফতার করেছে। সে প্রকৃত আসামি নয়।

শ্রীপুর মডেল থানার এএসআই কফিল উদ্দীন বলেন, আমি শ্রীপুরে নতুন জয়েন করেছি। নামের মিল দেখে গ্রেপ্তার করা হলেও কেউ আমাকে বলেনি। তবে আদালতে পাঠানোর পরে জানতে পারি ভুল আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি সহজেই ছাড়া পাবেন।

শ্রীপুর মডেল থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, বন মামলায় যে তথ্য দেওয়া আছে সে তথ্যের ভিত্তিতে আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads