• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
পাসপোর্টের ফরম জমা দিতে না পারায় গলায় ফেস্টুন ঝুলিয়ে প্রতিবাদ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

পাসপোর্টের ফরম জমা দিতে না পারায় গলায় ফেস্টুন ঝুলিয়ে প্রতিবাদ

  • কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

যথাযথ নিয়ম পালনের পর পাসপোর্ট আবেদন জমা দিতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়া এক যুবকের ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও এলাকায় ঝড় তুলেছে।

কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সামনে আজ রোববার দুপুরে তিনি গলায় ফেস্টুন ও হাতে আবেদন ফরম ধরে দাঁড়িয়ে হয়রানির নিরব প্রতিবাদ করেন। যা পাসপোর্ট অফিসে আসা সেবাপ্রার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা দেখে ছবি করে অনেকের ফেসবুক ওয়ালে ছড়িয়ে দিয়েছেন। সেখানে নানাজন নানান মন্তব্য করে হয়রানির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। শহরের বিভিন্ন এলাকাতে চলছে নানা সমালোচনা।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, প্রতিবাদী যুবক শহিদুল ইসলাম (২০) কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওর সাতঘরিয়া পাড়ার মৃত নুরুল আলমের ছেলে।

শহিদুল ইসলাম বলেন, বাবা নেই। এতিম জীবন ছন্নছাড়া চলছে। সম্প্রতি ড্রাইভিং ভিসায় স্বজনদের মাধ্যমে প্রবাসে যাওয়ার প্রস্তাব পান তিনি। কিন্তু পাসপোর্ট নেই, আগে ভোটারও হননি। তবে, ২০১৯ সালে নির্বাচন কমিশনের করা হালনাগাদ ভোটার তালিকায় তিনি নথিভূক্ত হয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সার্ভারে নথিভূক্ত হওয়া তার এনআইডি নাম্বার-১৯৯৯২২১২৪৩৫০০০২৪২। সেই হালনাগাদ ভোটাররা এখনো প্রিন্টেড এনআইডি পায়নি। ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য উদ্যোক্তার মাধ্যমে জানতে পারি নির্বাচন কমিশন সার্ভারে যুক্ত হওয়া নথি দিয়ে পাসপোর্ট আবেদন করা যাবে। সেভাবেই সরকারি ফি দিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে সীলসহ সার্ভারের নথি সংগ্রহ করে তা সহ যাবতীয় ডকুমেন্ট নিয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছি।

তিনি আরো বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত টাকা ব্যাংকে জমা করে আবেদন কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে গিয়ে থমকে যায়। প্রিন্টেড এনআইডি কপি না থাকার অজুহাতে কর্তৃপক্ষ ফরম জমা না নিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে। নির্বাচন অফিসের দেয়া এনআইডির সার্ভার কপিটি সাময়িক সনদের মতো কার্যকরী জানার পর ১৮ ফেব্রুয়ারি আবারো জমা দিতে যায়। কিন্তু একই অজুহাতে আবারো ফেরত পাঠানো হয়। আমার মতো আরো অনেককে একই অজুহাতে বের করে দিয়েছে দেখে সিদ্ধান্ত নিলাম অন্যকেউ আসুক না আসুক নিজেই প্রতিবাদ করবো। তাই আমার আবেদন, সার্ভার নথি যোগ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কয়েকটি বাণী এবং পাসপোর্টের মূল স্লোগান যুক্ত করে একটি প্লে-কার্ড করেছি ১৯ তারিখ। ২০ তারিখ চুপিসারে অফিসের গেইটে এসে দাঁড়িয়েছি। খবর নিয়ে দেখেছি, দালালের মাধ্যমে না আসলে পাসপোর্ট সেবাপ্রার্থীদের এভাবে একটা না একটা অজুহাতে অহেতুক হয়রানি করা হয়। তাই নিরব প্রতিবাদটি করেছি।

শহিদুল আরো বলেন, বিষয়টি উল্লেখ করে ফরম জমা নিতে ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়ে একটি ই-মেইলও করেছি পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত মহাপরিচালকের ই-মেইলে। এখনো (বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত) কোন উত্তর পাননি বলে দাবি করেন তিনি।

তার অভিযোগ সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক (এডি) মোহাম্মদ তাজ বিল্লাহ বলেন, উপর থেকে নির্দেশনা রয়েছে প্রিন্টেড এনআইডি কপি না থাকলে ফরম জমা নেয়া যাবে না। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় হয়তো এমন সিদ্ধান্ত। তবে, হালনাগাদ তালিকাভূক্তরা প্রিন্ট কার্ড না পেলে সেই ক্ষেত্রে কি করনীয় এমন প্রশ্নে তিনি (এডি) কোন সদুত্তর দেননি।

অন্যদিকে, একই ভাবে ভোগান্তিতে পড়া কক্সবাজারের পেকুয়ার উপকূলীয় ইউনিয়ন রাজাখালীর শফিউল আলমের ছেলে মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, আমি ভোটার হয়েছি ২০০৮ সালে। এনআইডি কার্ডও রয়েছে। সাম্প্রতিক বন্যায় ঘর ভেঙ্গে গেলে অর্জিনাল কার্ডটি কাদায় নষ্ট হয়ে যায়। এর ডুপ্লিকেট কপি তুলেছি, আবার সার্ভার কপিও নির্বাচন অফিসের সীলে সত্যায়িত করে দেয়া হয়েছে। এরপরও আবেদন ফেরত দেয়া হয়েছে। বলেছে, আসল কপি থাকতে ডুপ্লিকেট কপি কেন করা হয়েছে? কারণ বলার পর, বললো-দুটাই নকল!

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শিমুল শর্মা বলেন, হালনাগাদ নথিভুক্ত হওয়াদের অনেককে এখনো প্রিন্টেড কপি দেয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু যারা হালনাগাদে চুড়ান্ত হয়েছেন তাদের নথি সার্ভারে যুক্ত হয়েছে। সেই সার্ভার কপি দিয়ে প্রিন্টেড এনআইডির প্রয়োজনীয় যাবতীয় কার্য সম্পন্ন করা যাবে। এটি সাময়িক সনদের মতোই কার্যকর। কেন সেটা মূল্যায়িত হচ্ছে না আমার বোধগম্য নয়। আগের এডি মহোদয় এসব নথি নিয়ে অনেক পাসপ্র্টো দিয়েছেন বলে আমার জানা আছে। শুধু সঠিক ভাবে চেক করার অনুরোধ করতেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads