• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
‘অপরাধে জড়াচ্ছে রোহিঙ্গারা, কন্ট্রোল করা না গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে'

ফাইল ছবি

সারা দেশ

‘অপরাধে জড়াচ্ছে রোহিঙ্গারা, কন্ট্রোল করা না গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে'

  • কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে আমি অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখি না। তারা ক্রাইমে জড়িয়ে যাচ্ছে। এটি কন্ট্রোল করা না গেলে অবস্থা ভয়াবহ হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সংকট মোকাবেলা করতে হবে।

আজ রোববার সকালে কক্সবাজার জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা মনে করে সন্তান জন্ম নেওয়া ফরজ। তাই সেখানে জন্মহার বেশি। আমার মনে হচ্ছে অতি সন্নিকটে রোহিঙ্গারা ২৫ লাখে পরিণত হবে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির বিশেষ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের স্থানীয় সংসদ সদস্য জাফর আলম এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি এবং সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সহ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের প্রতিনিধি, বিজিবি, র?্যাব, কোস্ট গার্ডের অধিনায়কবৃন্দ, কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর স্থানীয় প্রধান সহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ বিশেষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম বলেন, পর্যটন শহর হিসেবে আইনশৃঙ্খলা মোটামুটি ভাল আছে। ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আছে। ক্যাম্পে আছে, ক্যাম্পের বাইরেও আছে। রোহিঙ্গা শিবিরে আইনশৃঙ্খলা অনেক উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, যেগুলো আমাদেরকে অবাক করে দেয়। সন্ত্রাসীদের তৎপরতা, মৌলবাদীদের আনাগোনা, নানা অচেনা মানুষের যাওয়া আসা নানাভাবে প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারপরও আমরা আশঙ্কামুক্ত নয়। কক্সবাজার একটি সম্ভাবনাময়ী স্থান। আন্তর্জাতিক চক্রান্তে কক্সবাজারকে যদি ধ্বংস করে দিতে পারে, তাহলে আমাদের দেশের সার্বিক ক্ষতি হয়ে যাবে।

জেলা মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার মো. শাহজাহান বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে অস্ত্রের মহড়া চলছে। অস্ত্রের মহড়ায় যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা হচ্ছেন ক্যাম্পের চেয়ারম্যান। রোহিঙ্গারা ভোটের মাধ্যমে এই চেয়ারম্যানদের নির্বাচিত করেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবার কিসের নির্বাচন, কিসের চেয়ারম্যান সেটা আমার বুঝে আসে না।

জেলা জাসদের সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী টুটুল বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে মাদক, অস্ত্রের মহড়া চলছে। এ দেশের বিরোধী কাজ করছে। অনেক এনজিওর অশুভ তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। গেল বছর একটি এনজিও রোহিঙ্গাদের বিপুল পরিমাণ নিড়ানী দেওয়ার চেষ্টা করে। তারা সফল হলে কক্সবাজারের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।

উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী আক্ষেপ নিয়ে বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে আমার বাড়ি। আমার একটাই দাবী, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে মনে হচ্ছে ভাসানচরে যে পুর্নবাসনের জন্য আবাসনগুলো গড়ে তোলা হয়েছে সেগুলোতে আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হোক। রোহিঙ্গাদেরকে উখিয়া দিয়ে দেওয়া হোক।

জেলা আওয়ামী লীগের অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা বলেন, এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণে নেই। কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের ফেরত না পাঠানোর মিশনে নেমেছেন। এই অশুভ তৎপরতা ঠেকাতেই হবে।

পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমাদের সবচেয়ে বড় আশঙ্কা। তবে বেকার থাকার কারণে তাদের কেউ কেউ অপরাধে জড়াচ্ছে। জঙ্গিবাদসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬৪ জন সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি মারা গেছেন।

তিনি আরও বলেন, সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে তাদেরকে দ্রুত প্রত্যাবাসন করাই একমাত্র সমাধান। কারণ রোহিঙ্গারা দূর্বল পজিশনে আছে। যেকোন স্বার্থান্বেষী মহল তাদেরকে জঙ্গিবাদে টেনে নিয়ে যেতে পারে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত করতে পারে। এই ঝুঁকিটা সব সময় আছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads