• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
সোনাগাজীতে বলাৎকার গোপন রাখতে কোরআন শপথ করায় শিক্ষক

অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক ইয়াসিন আরাফাত

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

সোনাগাজীতে বলাৎকার গোপন রাখতে কোরআন শপথ করায় শিক্ষক

  • সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

যৌন হয়রানীর ভয়ে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছে ধরা পড়ে কয়েকজন মাদ্রাসা ছাত্র। পুনরায় তাদের উপর চলে যৌন নির্যাতন। তারা পরিবারের কাছে বলে দিবে জানিয়ে প্রতিবাদ করলে মাদ্রাসা শিক্ষক তাদের কে কোরআন শরীফ শপথ করায় এমনি অভিযোগ করেছেন সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের রহমানিয়া মাদানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ছাত্রের পিতা।

বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবুকে অবহিত করা হলে তিনি আজ মঙ্গলবার সকালে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ইয়াসিন আরাফাতকে ধরে এনে সোনাগাজী মডেল থানায় সোপর্দ করেন।

জানা গেছে,ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নের চাদপুর গ্রামের আবু জাফর তার ১২ বছর বয়সী শিশু সন্তান কোরআন শরীফ হেফজ করানোর জন্য সোনাগাজীর রহমানিয়া মাদানি হাফেজী মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। গত দেড় বছর ধরে শিশুটি মাদ্রাসার হোস্টেলে থেকে পড়ালেখা করছে। মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক নোয়াখালী জেলার সুবর্নচর উপজেলার বাসিন্দা হাফেজ ইয়াসিন আরাফাত কয়েকজন ছাত্রকে গত এক বছর ধরে ধারাবাহিক যৌন নির্যাতন করেছে। নির্যাতনের শিকার ছাত্ররা মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সাধারন সম্পাদক মুশফিকুর রহমানকে জানালেও তিনি কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করেননি।

যৌন নির্যাতনের শিকার ছাত্রের পিতা আবু জাফর জানায়, তার ছেলেসহ আরো কয়েকজন ছাত্রকে বহুবার যৌন নির্যাতন করে শিক্ষক ইয়াসিন। গত ১৮ জানুয়ারী রাতে শিক্ষক তার ছেলেকে সর্বশেষ যৌন নির্যাতন করে। ভোর রাতে সে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে শিক্ষক তাকে ধরে এনে মাদ্রাসার হোস্টেলে আটক রেখে কাউকে না জানানোর জন্য কোরআন শরীফ শপথ করায়। ঘটনাটি জানতে পেরে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর তার ছেলে যৌন নির্যাতনের সব ঘটনা প্রকাশ করেন।

আবু জাফর আরো জানায়, ঘটনার কয়েকদিন পর  অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবী করে মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সাধারন সম্পাদক মুশফিকুর রহমানের কাছে সবকিছু অবহিত করলেও তিনি কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করেননি। পরে গত সোমাবার(২৪ ফেব্রুয়ারী) স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবুর কাছে লিখিত অভিযোগ করা হলে তিনি গ্রামপুলিশ পাঠিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে মঙ্গলবার সকালে পরিষদে হাজির করেন। সবার উপস্থিতিতে সে তার অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করলেও চেয়ারম্যান তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবু বলেন, সে তার অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করলেও বিষয়টি আমার এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করি। এর আগেও  ছাত্রদের শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ এনে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কয়েকজন ছাত্রের অভিভাবক পরিষদে লিখিত অভিযোগ করেন। ভবিষ্যতে একই অপরাধ পুনরায় করবেনা মুচলেকা দিলে তাকে সতর্ক করা হয়।

সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,যৌন নির্যাতনের শিকার ছাত্রের পিতা থানায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads