টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলায় জ্বর-সর্দি নিয়ে বাড়ি থেকে নিখোজ হয়েছেন মিন্টু মিয়া (২২) নামের এক যুবক।
জানা যায়, ট্টগ্রামে একটি কোম্পানিতে চাইনিজদের সাথে কাজ করতো মিন্টু মিয়া। সেখানে থাকা অবস্থাতেই সর্দি-কাশি ও ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সে বাড়িতে ফিরে আসে। তার এ অবস্থা জানার পর তার বাবা-মা ও প্রতিবেশীরা করোনা আতঙ্কে তাকে হোম কোয়ারেইন্টিনে থাকতে বলায় সে পালিয়ে যায়।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের ১ নং পুর্নবাসন গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। মিন্টু ওই গ্রামেরই মো. সাইফুল ইসলাম সরকারের ছেলে। তিনি বলেন, আমার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে কাজ করে আসছে চায়নাদের সাথে। সে ঘন ঘন কোম্পানি পরিবর্তনও করে। ছুটির পর সর্দি ও ঠান্ডা জ্বর নিয়ে বাড়িতে আসে। করোনা ভাইরাসের আশঙ্কায় তাকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য বলা হলে, সে বলে আমাকে কোন ভাইরাসে ধরেনি।
সম্প্রতি গত বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) থেকে সরকার ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন। পরদিন শুক্রবার (২৭ মার্চ) সকালে ওই অসুস্থ্য শরীরেই বাড়ি ফিরেন তিনি। এদিকে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের মধ্যে একটি লক্ষণ হলো, সর্দি ও ঠান্ডা-জ্বর। শরীরের এ অবস্থা নিয়েই চট্টগ্রাম থেকে বাড়ী ফেরার পর করোনা ভাইরাসের আশঙ্কা ও আতঙ্কে তার পরিবারকে লকডাউন করে রেখেছে প্রশাসন।
এতে করে তার পরিবারের মাঝে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। এ আতঙ্কের মধ্যে ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছে না এলাকাবাসী।
এমন আতঙ্কের ঘটনায় মিন্টুর মা বলেন, ছেলে বাড়ি ফিরে আসলেই ১৪ দিনের হোম কোয়ারেইন্টিনে থেকে চিকিৎসা নেয়ার জন্য বলা হলে আমাদের সাথে রাগারাগি করে। একপর্যায়ে শুক্রবার দুপুরে পাড়ার প্রতিবেশীদের চাপে বাড়ী থেকে চলে যায়। তারপর থেকেই মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) ৪ দিন ধরে আর বাড়ি ফেরেনি। আত্মীয় স্বজন ও শ্বশুর বাড়িতেও খোঁজ নিয়েও কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নিকরাইল ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আব্দুল মতিন সরকার বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি, মিন্টু মিয়া দুই দিন নিজ বাড়িতে ছিল। পরে পরিবারের ও প্রতিবেশীদের চাপে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা বললে সে বাড়ি থেকে চলে যায়। তারপর থেকে মিন্টুর মোবাইল বন্ধ, পরিবারের সাথেও কোন যোগাযোগ নেই।
তিনি আরোও বলেন, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ওই পরিবারকে লকডাউন করে দেই।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রাশিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি। ছেলেটি বাড়ি থেকে পালিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যানদের একটি সেল গঠন করে দেয়া হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখবেন।