• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
ক্রেতার অভাবে পচে যাচ্ছে পাহাড়ি কৃষকদের উৎপাদিত ফসল

ছবি : নূর হোসেন মামুন

সারা দেশ

করোনার প্রভাবে হাট-বাজার বন্ধ

ক্রেতার অভাবে পচে যাচ্ছে পাহাড়ি কৃষকদের উৎপাদিত ফসল

  • কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০১ এপ্রিল ২০২০

নূর হোসেন মামুন

কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গা ত্রিপুরাছড়ির কৃষক যতিন বিকাশ তনচংগ্যা। কৃষি তাঁর একমাত্র পেশা। তার ক্ষেতের উৎপাদিত বিভিন্ন সবজি যেমন বেগুন, লাউ সাপ্তাহিক হাটে বিক্রি করে সংসার চালায়। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কাপ্তাইয়ের হাটবাজার বন্ধ থাকায় এখন নিরুপায় হয়ে সাফছড়ি রাস্তার উপর বিক্রি করতে হচ্ছে তার ক্ষেতের সবজি।

মাঝে মাঝে দু-এক জন ক্রেতা আসলেও অধিকাংশ পণ্য পচে যাচ্ছে তাদের। দিনে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০০ থেকে ২০০ টাকা। অথচ সাপ্তাহিক বড়ইছড়ি এবং ঘাগড়া বাজারে গড়ে হাজার টাকার উপর বিক্রি হতো তাদের ক্ষেতের উৎপাদিত ফসল।

কাপ্তাইয়ে ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সাফছড়ি এবং বটতলি পাড়ায় সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের পাশে ক্ষেতের টমেটো, বেগুন, থানকুনি পাতা, রাঙ্গা আলু নিয়ে বিক্রি করতে এসেছেন ত্রিপুরাছড়ির শচীন তনচংগ্যা, বাবুল তনচংগ্যা সাফছড়ি পাড়ার রুপনা তনচংগ্যা এবং মেনকা তনচংগ্যা।

তাদের সকলের চোঁখে মুখে সকলের বিষাদের ছায়া, ক্রেতা কম তবুও মাঝে মাঝে কিছু পাড়ার লোক এসে নিয়ে যাচ্ছে স্বল্প দামে এইসব পণ্য।

তারা জানান, সপ্তাহের মঙ্গলবার ও শুক্রবার তারা এই পথের দ্বারে বিক্রি করতো হাজার টাকা, এখন সড়কে গাড়ী চলাচল কম থাকায়, অফিস বন্ধ থাকায় লোকজনের চলাচল একেবারে নাই।

একই চিত্র দেখা যায় ওয়াগ্গার বটতলি পাড়ায়। এখানে কাঁচা মরিচ বিক্রি করতে এসেছেন মায়ারাম তনচংগ্যা। তিনি জানান, দুপুর হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার ক্ষেতের উৎপাদিত কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে মাত্র ১০০ টাকার মতো।

কৃষকরা জানান, ক্রেতার অভাবে উৎপাদিত ফসল বিশেষ করে বেগুন, টমেটো পঁচে যাচ্ছে। তারা সকলে সীমিত আকারে কয়েক ঘন্টার জন্য সাপ্তাহিক বড়ইছড়ি বাজার চালু রাখার দাবি জানান।

ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মায়ারাম তনচংগ্যা জানান, বেচাবিক্রি না থাকায় তার এলাকার কৃষকের উৎপাদিত পণ্য নষ্ট হচ্ছে, ফলে চরম আর্থিক দৈন্যতায় দিন কাটছে এদের, তিনি সীমিত আকারে হাটবাজার চালু করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানান।

ওয়াগ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান চিরঞ্জিত তনচংগ্যা আমাদের কাপ্তাই প্রতিনিধি নূর হোসেন মামুনকে জানান, তাঁর এলাকার অধিকাংশ জনগণ কৃষির উপর নির্ভরশীল। কৃষিপণ্য বিক্রি করে তাদের সংসার চলে। তিনিও সাপ্তাহিক হাটবাজার সীমিত আকারে চালু রাখার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এই ব্যাপারে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহমেদ রাসেল বাংলাদেশের খবরকে জানান, সরকার করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধকল্পে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতকরণের লক্ষে সাপ্তাহিক হাটবাজার বন্ধ রেখেছে, কারণ হাটবাজারে প্রচুর ক্রেতাবিক্রেতা আগমন ঘটলে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটতে পারে, তবে তিনি কৃষকদের সাপ্তাহিক হাটবাজার দিন ছাড়া পচনশীল দ্রব্য নির্দিষ্ট দুরত্ব বজায় রেখে বাজারে বিক্রি করার পরামর্শ দেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads