• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
আদিবাসী সাঁওতালদেরকে দেখার কেউ নেই

ঘোড়াঘাটে অনাহারে কাটাচ্ছে আদিবাসী সাঁওতালরা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

আদিবাসী সাঁওতালদেরকে দেখার কেউ নেই

  • ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০২ এপ্রিল ২০২০

লোটাস আহম্মেদ:

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মহামারি আকার ধারণ করেছে কোভিট-৯০ বা নভেল করোনা ভাইরাস। আর এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সারা দেশব্যাপী চলছে অঘোষিত লকডাউন। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষ গুলো। তবে সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই এসব দিনমজুর মানুষের মাঝে খাবার সামগ্রী সহ বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছেন। দিন কিংবা রাত, প্রকাশ্য কিংবা গোপনে অনেকেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন।

তবে এসব খাবার সামগ্রী ও বিভিন্ন সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট সহ আশেপাশে বেশ কয়েকটি উপজেলার আদিবাসী সাঁওতালরা। খাবার সামগ্রী ও সহযোগিতা তো দূরের কথা কোনো দাতা সংস্থা বা ব্যাক্তির দেখাও তাদের ভাগ্যে জোটে না।

দেশের আদিবাসী সাঁওতালদের একটি বড় অংশ বাস করে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর, নবাবগঞ্জ ও বিরামপুর সহ বেশ কয়েকটি উপজেলায়। মহামারী করোনার হাত থেকে বাঁচতে সকলে যখন ঘরের মধ্যে বন্দী। তখন কোন কাজ ও অর্থ না থাকায় এসব আদিবাসীদের অনেকেই না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

আদিবাসী শিক্ষক ডেনিস মুর্মু বলেন, আমরা আদিবাসীরা সবাই কাজ করে খাই। এখন করোনা ভাইরাসের কারণে সব কাজ বন্ধ। আমাদের আদিবাসীদের অনেকেই না খেয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। অনেক ব্যক্তি ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ক্ষুধার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু আমাদেরকে সহযোগীতা তো দুরের কথা কোন ব্যক্তি বা সংস্থার দেখাও আমরা পাইনি। আমরা আদিবাসীরা আজ বঞ্চিত।

আদিবাসী কাকরু হেমরম বলেন, 'হামরা বেশির ভাগ লোক কৃষি কাম (কাজ) করে, দিন আনি দিন খাই। কিসের বলে ভাইরাস বারাছে! যে কারনে ঘরের বাহিরেত যাবার পাচ্ছি না। কেও কোন কাম কাজের জন্যও হামার হেরোক ডাকিচ্ছে না। কিন্তু পেট তো আর কোন কিছু মানিচ্ছে না। ছোলপোল নিয়ে না খেয়ে থাকিচ্ছি'।

দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, আমি কথা দিয়েছি আমার প্রাণ থাকতে আমার আসনের একটি জনগণকেও না খেয়ে মরতে দিব না। সরকারের পাশাপাশি আমি ব্যাক্তিগত ভাবেও ত্রাণ সহায়তার জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। আমার নির্বাচনী এলাকার ৩টি উপজেলার অধিকাংশ মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে গিয়েছে। আমি দিন রাত নিজে এসব খাবার বিতরণ করেছি। অতিদ্রুত ঘোড়াঘাটে খাবার পৌঁছে যাবে। খেটে খাওয়া দিনমজুর ও অনাহারে থাকা ব্যাক্তিদের তালিকা করতে উপজেলা ও থানা প্রশাসন এবং উপজেলা, ইউনিয়ন থেকে শুরু ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশনা দিয়েছে। তালিকা করার সময় কোন দল, মত, জাতি বা গোষ্ঠি যেন না দেখা হয় সে ব্যাপারেও বলে দিয়েছি। অসহায় ও অনাহারে থাকা ব্যাক্তিদের কোন দল বা মত থাকে না। সরকারী ত্রাণ জনপ্রতিধিদের মাধ্যমে বিতরণ করা শুরু হয়েছে। অতি দ্রুত আমার নির্বাচনী এলাকার সকল মানুষের কাছে আমার ব্যাক্তিগত ত্রাণ পৌঁছে যাবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads