• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
বাউফলে ৪২ মেট্রিকটন জব্দকৃত চাল ছিল কাবিখার

প্রতিনিদির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

বাউফলে ৪২ মেট্রিকটন জব্দকৃত চাল ছিল কাবিখার

  • বাউফল প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৪ এপ্রিল ২০২০

পটুয়াখালীর বাউফলে জব্দ ৪২ মেট্রিকটন সরকারি চাল ছিল কাবিখা (কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচি) প্রকল্পের। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এ তথ্য জানা গেছে।

উপজেলার বগা বন্দরে গত বুধবার (১৫ এপ্রিল) পুলিশ ৪২ মেট্রিকটন সরকারি চাল জব্দ করে। প্রমান মিলেছে, বাউফল ও বরিশালের হিজলা উপজেলার কাবিখার প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কয়েকজন সিপিসি (সভাপতি) কালো বাজারে বিক্রি করেন এসব চাল। ট্রলারযোগে নিয়ে এসে বন্দরের ব্যাক্তিমালিকানাধিন এক গোডাউনে তোলার সময় ওই চাল জব্দ করে ক্রেতা শাহাজাহান (৩৫) ও ট্রলার মালিক জয়নাল চৌকিদার (৩০) নামে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয় দুই জনকে। এরপর বিশেষ ক্ষমতা আইনে বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন বগা বন্দর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাব-ইন্সপেক্টর মাধব চন্দ্র দে। আর মামলাটি তদন্ত করছেন ওই পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মহিব্বুল্লাহ।

পুলিশ ও বিশস্ত সূত্রে জানা গেছে, বগা বন্দরের খাল লাগোয়া একটি ব্যাক্তিমালিকানাধিন গোডাউন ভাড়া নিয়ে কালোবাজারে চাল ক্রয় করে তা মজুদ ও সেখান থেকে সুবিধামতো বাজারজাত করছিলেন বানাজোরা গ্রামের শাহজাহান হাওলাদার। ট্রলারযোগে নিয়ে এসে ওই গোডাউনে তোলার সময় জব্দকৃত চালের প্রতিটি ৩০ কেজির বস্তায় ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, খুদা হবে নিরুদ্দেশ’ ডায়লগসহ ও খাদ্য অধিদফতরের সিল অঙ্কিত ছিল। আটক শাহজাহানের বক্তব্য যাচাই-বাছাই করে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানতে পারেন চালগুলো তিনি কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচি (কাবিখা) প্রকল্পের সিপিসিদের কাছ থেকে ক্রয় করেছেন।

এ সময় পুলিশের উদ্ধার করা সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের দুর্যোগ ও ত্রাণ শাখার বিভিন্ন তারিখে ইস্যুকৃত ১২টি ডিও’র (ডেলিভারি অর্ডার) কপি পর্যালোচনায় হিজলা উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর আবদুল খালেক খান সিপিসি হয়ে প্রতিটি ৮ মেট্রিকটন হিসেবে দুটি প্রকল্পের মোট ১৬ মে. টন চাল বরাদ্দ নেন এবং সেকান থেকে তিনি ২ মেট্রিকটন হিসেবে দুই প্রকল্পের মোট ৪ মেট্রিকটন চাল এই চক্রের কাছে বিক্রি করেন। একই ইউনিয়নের হামিম মেম্বর নামে অপর একজন ওই এলাকার পূর্ব-খাগের চর শহিদ বেপারি বাড়ির পূর্ব-পাশ থেকে হাকিম হাওলাদার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পূন:নির্মাণ নামে অপর এক প্রকল্পের সিপিসি এবং ওই প্রকল্পের বরাদ্দকৃত পুরো ৯ মেট্রিটন চালই চারটি পৃথক ডিও’র মাধ্যমে এ চক্রের কাছে বিক্রি করেন। একই ইউনিয়নের মেম্বর আবদুল লতিফ মৃধা নামে আরো একজন ২ টি প্রকল্পের ৬ মেট্রিকটন ও পাশের গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের মেম্বর জয়নাল আবেদীন সাড়ে ৪ মেট্রিকটন, কামাল সরদার দুই প্রকল্পের ৬ মেট্রিকটন, হরিনাথপুর ইউনিয়নের মেম্বর মোজাম্মেল রাড়ি ২ টন এবং একটি খাল খনন প্রকল্পের সিপিসি বাউফলের চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ সভাপতি মো. জাফর তার প্রকল্পের বরাদ্দকৃত চালের ১১.২৫০ মেট্রিকটন চাল এ চক্রের কাছে বিক্রি করেন।

এ ব্যাপারে চন্দ্রদ্বীপ ইউপির চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক আলকাস মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, চন্দ্রদ্বীপের ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জাফর দিয়ারা কচুয়া কাটাখালী খাল খনন প্রকল্পের সিপিসি। তিনি ডিও নিয়ে খাদ্য গুদাম থেকে ১১.২৫০ মেট্রিকটন চাল নিলেও এখন পর্যন্ত ওই খালটি খনন করা হয়নি।

এ ব্যাপারে কালাইয়া বন্দরের খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দত্ত জানান, বাউফল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. সিদ্দিকুর রহমানের ৮ মার্চ তারিখের বিলি আদেশ (ডিও) অনুযায়ী মো. জাফর গত ১৭ মার্চ ১১.২৫০ মেট্রিকটন (৩৭৮ বস্তা) চাল গুদাম থেকে উত্তোলন করে নিয়ে যান।

বগা বন্দরের পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মহিবুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ সব বিষয় আমলে নিয়ে মামলাটি তদন্ত চলছে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads