• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৩ হাজার টাকা দান করলেন জামালপুরের রিকশাচালক

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৩ হাজার টাকা দান করলেন জামালপুরের রিকশাচালক

  • জামালপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৯ এপ্রিল ২০২০

এবার প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৩ হাজার টাকা দান করলেন জামালপুরের দরিদ্র রিকশাচালক মো. হযরত আলী। আজ মঙ্গলবার বিকেলে তিনি জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোকলেছুর রহমানের হাতে টাকাগুলো তুলে দেন।

জানা যায়, রিকশাচালক মো. হযরত আলীর (৬৪) বাড়ি জামালপুর পৌরসভার পাথালিয়া ছাতার মোড় এলাকায়। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে তার। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে শ্রম খেটে খায়। আরেক ছেলে শহরের একটি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। হযরত আলী ২০০৬ সাল থেকে ঢাকায় রাজারবাগের কুসুমবাগ এলাকায় ভাড়াবাসায় থেকে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে হযরত আলী নিজেও কর্মহীন হয়ে পড়েন এবং স্ত্রীকে নিয়ে মাসখানেক আগে ঢাকা থেকে জামালপুরে চলে আসেন।

ঢাকায় রিকশা চালিয়ে উপার্জিত টাকার খরচ বাদে কিছু টাকা জমিয়ে একটি গরু কেনেন। জামালপুরে তার গ্রাম এলাকায় এক ব্যক্তিকে গরুটি বর্গা দেন। কামাই-রোজগার না থাকায় সেই গরুটিও বিক্রি করে দেন তিনি। গরু বিক্রির টাকা থেকে তিনি ১৩ হাজার টাকা করোনায় তার মতোই কর্মহীন হয়ে যারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন তাদের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছা পোষণ করেন। যেই ইচ্ছা সেই কাজ। তার সেই ১৩ হাজার টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করেছেন তিনি।

 

মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে তার টাকাগুলো গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোকলেছুর রহমান।

রিকশাচালক মো. হযরত আলী বলেন, আমি নিজেও একজন গরিব মানুষ। কিন্তু দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি ভালা দেখতাছি না। করোনায় মানুষের মেলা ক্ষতি অইতাছে। মেলা মানুষ অভাবে আছে। মানুষ মারাও যাইতাছে। ওষুধ কিনবার পাইতাছে না। মানুষের এই সমস্ত সমস্যা দেইখা আমার ভালা লাগে না। আমি টাকা দিয়া কি করমু। বাঁচমু কিনা তারও কোনো গ্যারান্টি নাই। আর আল্লায় বাঁচাইয়া রাখলে কামাই মেলা করবার পামু। তাই আমি আমার কষ্টের টাকায় কিনা গরু বিক্রির টাকা থেইকা সামান্য কিছু টাকা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিলাম। উনি যেন এই টাকা দিয়া গরিব মাইনষেরে খাবার ও ওষুধ কিনা দেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোকলেছুর রহমান বলেন, রিকশাচালক হযরত আলীর মতো একজন দরিদ্র মানুষ তার কষ্টের জমানো টাকা থেকে এই যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৩ হাজার টাকা জমা দিলেন- এটা মহত্বের লক্ষণ। কারণ উনি চিন্তা করেছেন যে ওর চেয়ে বেশি দরিদ্র যারা, তাদের যদি উপকার হয়, সেই চিন্তা থেকেই উনি যেটা করলেন, সেটা অবশ্যই একটি মহৎ কাজ।

তিনি আরো বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে উনার টাকাগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পাঠানো হবে। উনার এই অবদানের কথা জেলা প্রশাসন সব সময় মনে রাখবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads