একই কারণে পাঁচ সপ্তাহর বেশি সময় বন্ধ থাকার পর রোজার মাসে বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্প্রতি বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু দুই দিন পর ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কায় সেদেশে এর প্রতিবাদ হয়।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, ভারত থেকে গত দুই দিনে ১৫ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধিবিধান মেনে শূন্যরেখায় লোড-আনলোড করা হয়েছে। কিন্তু ভারতে আন্দোলনের মুখে রোববার সকাল থেকে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ গেছে।
বন্দর ব্যবহারকারী ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মতপার্থক্যের জন্যই এই বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে।
ভারতের পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করার জন্য রোববার দুপুরের পর বনগাঁ থেকে ছয়ঘরিয়া পর্যন্ত তৃণমুল কংগ্রেসের সমর্থকরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেন।
পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য সরকারের ক্ষমতাসীন তৃণমুল কংগ্রেস সমর্থকদের দাবি, ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি হলে ওই ট্রাকের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে করোনাভাইরাস ভারতে আসতে পারে। তাদের প্রতিরোধের মুখে রপ্তানি পণ্যবাহী কোনো ট্রাক বেনাপোলের শূন্যরেখায় যেতে পারছে না।
ভারতের বনগাঁ আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, “পেট্রাপোল পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, ভারতীয় ট্রাক চালক ও তার সহকারীরা বেনাপোল বন্দরে ঢুকলে তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। তাই ভারতীয় চালকরা পণ্যচালান নিয়ে শূন্যরেখা পর্যন্ত যাচ্ছিল। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে ট্রাক বন্দরের শূন্যরেখায় রপ্তানি শুরু করে। কিন্তু রাজ্য সরকারের সমর্থকদের প্রতিবাদের মুখে তা বন্ধ হয়ে গেছে।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ব্যবস্থাপক শুভজিত মণ্ডল বলেন, “সরকারিভাবে বন্দর চালু আছে। কিন্তু বনগাঁয় আন্দোলন করায় পণ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা খবর রাখছি পরিস্থিতি শান্ত হলে আবার কাজ হবে।”
বেনাপোল বন্দরও সব সময়ের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন শুল্কভবনের কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী।