• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
ফকিরহাটে কৃষকদের বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে উঠেছে বিষমুক্ত সবজি খামার

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

ফকিরহাটে কৃষকদের বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে উঠেছে বিষমুক্ত সবজি খামার

  • এস এম সামছুর রহমান, বাগেরহাট
  • প্রকাশিত ১০ মে ২০২০

বাগেরহাটের ফকিরহাটে কৃষি বিভাগের ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগের ফলে কৃষকদের বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে উঠেছে বিষমুক্ত সবজি খামার। এতদিনে ঘরের পাশের যে জমি পতিত অবস্থায় পড়ে ছিল এখন সেখানে চোখ জুড়ানো সবুজ ফসল। কৃষি বিভাগের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে চাষীরা বলছেন, ঘরের পাশের এই ফসল শুধু পরিবারের বিষমুক্ত সবজির চাহিদাই পুরণ করবে না, এটা তাদের মনের তৃপ্তিও যোগাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘একটুকু জমিও ফাঁকা থাকবে না” এমন নির্দেশনা বাস্তবায়নে ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাছরুল মিল্লাতের এই উদ্যোগ সারা দেশের মধ্যে প্রথম বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রঘুনাথ কর।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাস আতঙ্কের কারণে কৃষকরা অলস সময় কাটানো শুরু করলে কৃষকদের সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করতে গত ১ এপ্রিল থেকে কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে তাদের হাতে বিভিন্ন প্রকার সবজি বীজ তুলে দেন ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাছরুল মিল্লাত। বিনামূল্যে এই সবজি বীজ পেয়ে কুষকরা খুশি হয়ে তাদের ঘরের আঙ্গিনায় সঠিক দুরত্ব বাজায় রেখে মাস্ক ব্যবহার করে এই বীজ বপন করে। সঠিক সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় এই বীজ থেকে সহজে চারা গজায়। যা এখন দৃস্টি নন্দন হয়ে উঠেছে।

ফকিরহাট উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, অন্যান্য পেশার মানুষের মত কৃষকদের মাঝেও করোনাভাইরাস আতঙ্ক দেখা দেয়। ফলে কৃষকরা মাঠে না গিয়ে অলস সময় কাটানো শুরু করে। এসময় ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাছরুল মিল্লাত স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে নিজের উদ্যোগে চাষিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সঠিক দিক নির্দেশনা দেয়ার পাশাপশি কৃষকরা যাতে অলস সময় পার না করে সেজন্য তাদের কৃষি কাজে উদ্বুদ্ধ করতে বিনামুল্যে লাল শাক, পুইশাক, মিস্টিকুমড়া, লাউ, ঢেড়স ও শশার বীজ বিতরণ করেন। পরবর্তিতে বিভিন্ন আবারো বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে এই সবজি খোঁজ নেন।

লখপুর ইউনিয়নের ভল্লভপুর গ্রামের কৃষক কালাম ফরাজী জানান, ঘরে থেকে বেকার সময় কাটছিল। এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তার বাড়িতে এসে বিনামূল্যে কয়েক প্রকারের বীজ দিয়ে তা বাড়ির আঙ্গিনায় পতিত জমিতে লাগাতে বলেন। প্রথন এই করোনা ভিতর ঝামেলা মনে হলেও পরে ওই কর্মকর্তার সম্মানে বীজগুলো লাগাতে বাধ্য হই। ইতিমধ্যে গাছগুলো বড় হয়েছে। এখন এসব সব্জির পরিচর্যা করেই সময় কাটছে। অল্পদিনের মধ্যে ফলনও হবে। ঘরের কাছেই বিষমুক্ত সব্জি উৎপাদন করতে পেরে খুশি তিনি ও তার পরিবার।

একই এলাকার স্মৃতিরানী বিশ্বাস জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাড়িতে এসে বিনামূল্যে সব্জি বীজ দিয়েছিলেন। সেই বীজ থেকে এখন সবুজ ফসলে ভরে গেছে বাড়ির আঙ্গিনা। প্রতিদিন তিনি এই সবজির পরিচর্জা করেন বলে জানান।

লখপুর এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস জানান, কৃষকরা বিনামূল্যে পাওয়া সবজি বীজ নিয়ে তারা এখন বাড়িতে খামার গড়ে তুলেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাছরুল মিল্লাতের নির্দেশনায় এর আগেও এই এলাকায় রাস্তার পাশে পতিত জমিতে সীম চাষ করা হয়েছিল। যা দেশে অনেক চাষী এভাবে সীম চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাছরুল মিল্লাত বলেন, কৃষকরা যাতে অলস সময় পার না করে সেজন্য তাদের কৃষি কাজে উদ্বুদ্ধ করতে বিনামুল্যে লাল শাক, পুইশাক, মিস্টিকুমড়া, লাউ, ঢেড়স ও শশার বীজ বিতরণ করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের বাস্তবায় ‘এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা থাকবে না’ তার বাস্তবায়ন, কৃষকদের ঘরের পাশের পতিত জমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে তিনি নিজে থেকে এমন উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রঘুনাথ কর বলেন, সারা দেশের মধ্যে প্রথম ফকিরহাটে কৃষকদের বাড়িতে বাড়িতে বিনামূল্যে সবজি বীজ পৌছে দিয়েছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাছরুল মিল্লাত। যা কৃষকদের মাঝে ব্যপক সাড়া ফেলেছে। পরে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বাড়িতে বিনামূল্যে সবজি বীজ পৌছে দেয়ার নির্দেশনা আসে। বাড়িতেই বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে কৃষক নিজের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কিছু বিক্রিও করতে পারবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads