• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
লিবিয়ায় গুলিতে নিহত মুকসুদপুরের সুজনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

লিবিয়ায় গুলিতে নিহত মুকসুদপুরের সুজনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

  • গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ৩০ মে ২০২০

লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের গুলিতে নিহত সুজন মৃধার (২০) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিহতের পরিবারের স্বজনদের কান্না আর আহাজারীতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। সন্তানের লাশ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আকুতি জানিয়েছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।

গত জানুয়ারী মাসে পরিবারের অভাব মেটাতে কলেজ ছাত্র  সুজন মৃধা লিবিয়া পাড়ি জমান। গোপালগঞ্জের  মুকসুদপুর উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের বামনডাঙ্গা গ্রামের কৃষক কাবুল মৃধার ছেলে সুজন মৃধা। সুজনের বাবা একই ইউনিয়নের যাত্রাবাড়ী গ্রামের রব মোড়লের মাধ্যমে ছেলেকে লিবিয়া পাঠান। আর জন্য দালালকে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা দেন।

স্থানীয় মহাজন ও কৃষি জমি বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করেন তিনি। পরে তা তুলে দেন দালালের হাতে। ৩৫ হাজার টাকা মাসিক বেতন দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তাকে কোন কাজ দেয়নি দালাল চক্র। বরং মেরে ফেলার ১৭ দিন আগে সুজনকে ওই দেশে মানব পাচারকারী চক্রের হাতে তুলে দেয়।

২৬ মে মানব পাচারকারীরা সুজনের কাছে আরো ১০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে ভয়েস কল পাঠাতে বলে দেশে। ওই ভয়েস কলে সুজনকে মারপিট করার ভয়েস পাঠান। তখন সুজনের বাবা তাদের কাছে ১ জুন পর্যন্ত সময় চান। কিন্তু তার আগেই ওরা সুজনকে গুলি করে হত্যা করে।

ওই দেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশী আমীর দালালের মোবাইল ফোন থেকে এই ভয়েস কল পাঠানো হয় এবং সোমালিয়ায় আহমেদ মোহাম্মদ আদম সালামের ব্যাংক হিসেবে মুক্তিপনের টাকা পাঠাতে বলা হয়।

অপরদিকে, একই গ্রামের কালাম শেখের ছেলে ওমর শেখ (২২) গুলিবিদ্ধ অবস্থায় লিবিয়ার ত্রিপলি হাসপাতালে মৃত্যুর প্রহর গুনছ্নে। কাঠুরী বাবা পরিবারে একটু স্বচ্ছলতার জন্য ছেলেকে ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা দিয়ে একই গ্রামের দালাল লিয়াকত মোল্লার মাধ্যমে ছেলেকে লিবিয়া পাঠান।

নিহতের মা চায়না বেগম (৪৫) কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে আমার বুকে ফিরায় দেও। আমার ছেলেকে দালালরা নিয়ে গিয়ে ১৭ দিন কোনো খাবার দেয়নি। মারপিট করেছে। পরে মুক্তিপন দাবী করে গুলি করে হত্যা করেছে। আমি আমার সন্তানের লাশ চাই। আর ঘটনার সাথে জড়িত দালালদের ফাঁসি চাই। যাতে তারা আর কোনো মায়ের কোল খালি করতে না পারে।

একই দাবী জানিয়ে ওই গ্রামের জয়নাল সরদার (৬৫), লিটন মৃধা (৪৫), আকিজুল ইসলাম বাবুল (৬৫) বলেছেন, এই দালাল চক্রের হাতে গোহালা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের আরো বেশ কিছু যুবক লিবিয়ায় বন্দি আছে। আমরা তাদেরকে উদ্ধারের দাবী জানাচ্ছি। একই সাথে দালালদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবী করছি।

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, আমরা বিষয়টি বিভিন্ন গনমাধ্যম থেকে জেনেছি। বিষয়টি খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ইউএনও-কে পাঠানো হয়েছে। আমরা দালাল চক্র ধরতে চেষ্টা চালাচ্ছি। আর এ জন্য তিনি সবার সহযোগিতাও কামনা করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads